গাজীপুর: বিনা অপরাধে ৫ বছর ধরে কারাগারে বন্দি থাকা মো. আরমানকে হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আরমান রাজধানীর পল্লবীর বেনারসী কারিগর।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের নির্দেশে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
মূল আসামি শাহাবুদ্দিনের বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকায় আরমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৬ থেকে আরমান কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ বন্দি ছিলেন।
কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার আব্দুল জলিল জানান, ২০০৫ সালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় ককটেল ও দেশীয় অস্ত্রসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আসামিদের দেওয়া তথ্যে তাদের সহযোগীদের ধরতে ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূরে আলম সিদ্দিকী পল্লবীর বিহারী ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ৪০ বোতল ফেনসিডিলসহ শাহাবুদ্দিন বিহারি ও তার দুই সহযোগীকে আটক করেন। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পরে ২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শাহাবুদ্দিনসহ গ্রেফতার তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ২০০৭ সালের ৫ মার্চ জামিনে মুক্ত হয়ে ২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করে আবার জামিন আবেদন করে শাহাবুদ্দিন। এরপর ফেরারি হয়ে যান শাহাবুদ্দিন।
২০১২ সালের ১ অক্টোবর ওই মামলায় শাহাবুদ্দিন ও তার দুই সহযোগীর ১০ বছরের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা রায় দেন জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী ঢাকার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফারুক আহম্মদ। এরপর পলাতক শাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি পল্লবীর ১৩ হাটস, ব্লক-এ, সেকশন ১০ নম্বর এলাকায় অভিযান চালায় পল্লবী থানা পুলিশ। এ অভিযানে একটি চায়ের দোকান থেকে মূল আসামি শাহাবুদ্দিনের বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকায় আরমানকে গ্রেফতার করেন তৎকালীন পুলিশ। এরপর থেকে আরমান কাশিমপুর কারাগার-২ এ বন্দি ছিল।
আইজীবী হুমায়ূন কবিরের পল্লবীর এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩১ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আরমানকে মুক্তি দেওয়াসহ তাকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে পুলিশ মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশ দেন। অপরদিকে, বিনা অপরাধে জেল খাটার বিষয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন আরমান ও তার স্বজনরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৬০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২১
আরএস/এনটি
