মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার নলগোড়া এলাকার তৈয়ব আলী তালুকদার ও রহিমা বেগম দম্পতির আজ আনন্দের দিন। বৃদ্ধ এই পরিবারটি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার 'ঘর ও জমি' পেয়ে যেন বাকরুদ্ধ! প্রায় ৩৭ বছর ধরে অন্যের বাড়িতে আশ্রিত থেকে শেষ বয়সে এসে মাথা গোঁজার স্থায়ী ঠিকানা পেয়ে আনন্দে কিছু সময় কান্নাও করেছেন এই দম্পতি।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি ঘরের কাগজপত্র বুঝে পান।
অনুভূতি জানতে চাইলে কিছু সময় চুপ করে থেকে বৃদ্ধ তৈয়ব আলী তালুকদার বলেন, স্ট্রোক করার পর থেকে বেশি কথা বলতে পারি না। তারপরও বলছি, ছোট বয়সে অভাব-অনটনের মধ্যেই বাবার সঙ্গে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে থেকেছি। নিজ গ্রামের জায়গা-জমি কিভাবে হাতছাড়া হয়েছিল তা জানা নেই। হয়তো বাবা তখন বেঁচে দিয়েছিলেন সেসব। শৈশবের বড় একটা সময় কেটেছে মামা বাড়িতে। একপর্যায়ে সেখান থেকেও চলে আসতে হয়েছে। পরে বাড়ির কাছেই মইজুদ্দিন শিকদার নামে একজনের বাড়িতে দীর্ঘ ৩৭ বছর আশ্রিত ছিলাম।
তিনি আরো বলেন, বৈবাহিক জীবনে ৩ ছেলে ১ মেয়ে। বড় ছেলে কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। সবারই বিয়ে হয়েছে অন্যের বাড়িতে থেকেই। আমি ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতাম। অসুস্থ হওয়ার পর ছেলেদের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছি। ওরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে। শেষ বয়সে এসে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের জায়গা হলো।
আবেগ আপ্লুত বৃদ্ধ তৈয়ব আলী বলেন, আজকের পর থেকে আর ভাড়া থাকতে হবে না। নিজের ঘরে কষ্ট করে শেষ দিনগুলো কাটলেও মনে আর আপেক্ষ থাকবে না যে আমি গৃহহীন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলায় প্রথম ধাপে ৯৮৮টি ঘর বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৬টি ঘরের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে যা শনিবার গৃহ ও ভূমিহীন ১৪৬টি পরিবারের মধ্যে হস্তান্তর করা হলো। এর মধ্যে শিবচরে সম্পূর্ণ প্রস্তুতকৃত ৪৪টি ঘর উপকারভোগীর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২১
আরএ