ঢাকা: বস্তুগতভাবে একটি সভ্যতা যতই উন্নত হোক না কেন, তা একটা সময় ধ্বংস হয়ে যায়। সভ্যতা তখনই টিকে থাকে, যখন সভ্যতাকে আলোকিত বা উজ্জীবিত করার মতো মানুষ থাকে।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকায় অবস্থিত বুকল্যান্ড লাইব্রেরিতে ডিজিটাল অ্যাপস ‘আলোর ফেরী’ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুর।
তিনি বলেন, কয়েক দশক আগে মানুষের মধ্যে আত্মত্যাগের বিষয় ছিল বলে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু এখন আমাদের মধ্যে স্বার্থপরতা ঢুকে গেছে। সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে বুকল্যান্ড লাইব্রেরি ডিজিটাল অ্যাপসের মাধ্যমে ঘরে ঘরে বই পৌঁছানোর যে সুযোগ দিচ্ছে, তা সত্যি অনেক বড় কাজ এবং আনন্দের বিষয়। বই পড়ার মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, সোনার মানুষ গড়া সম্ভব। সেই কাজটিই বুকল্যান্ড লাইব্রেরি করে যাচ্ছে। মিনার মনসুর বলেন, সরকার দেশের ৭১টি পাবলিক লাইব্রেরিকে ডিজিটালাইজেশন করার কাজ করছে। আমরা জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রও সেদিকে এগোচ্ছি, যেন ডিজিটাল পদ্ধতিতে এক জায়গাতেই কেন্দ্রের সব ধরনের বই এবং অন্যান্য লাইব্রেরির তথ্য পাওয়া যায়। এটি হলে এটি বড় কাজ হবে। একইসঙ্গে আসল পাঠাগার, যারা সত্যি সত্যি কাজ করেন, তাদের একত্রিত হয়ে ভুয়া বা নামকাওয়াস্তের পাঠাগারগুলোকে দূর করতে হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত বইপ্রেমী। সবাইকে একত্রিত হয়ে তার কাছ থেকে আমাদের দাবিগুলো আদায় করে নিতে হবে।
এ সময় প্রধান অতিথি গ্রামভিত্তিক পাঠাগার গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একইসঙ্গে কম্পিউটার সাক্ষরতা এবং দক্ষ জনবল গড়ে তোলার বিষয়ে আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন লিডস কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ আব্দুল ওয়াহিদ, কবি ও প্রাবন্ধিক মজিদ মাহমুদ, বুকল্যান্ড লাইব্রেরির সহসভাপতি আনোয়ারুল হক, বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার সমিতির অর্থ সম্পাদক লায়লা পারভীন, গ্রাম পাঠাগার আন্দোলনের সভাপতি আব্দুস সাত্তার খান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বুকল্যান্ড লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক এম এম মাসুমুজ্জামান।
তিনি বলেন, লাইব্রেরি এমন একটা জায়গা যেখানে সবকিছু পাওয়া যায়। সেই সুবিধাকে আরও সহজ করে মানুষের কাছে বই পৌঁছে দিতেই এই অ্যাপভিত্তিক আয়োজন। পাঠাগারভিত্তিক সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপ ‘আলোর ফেরী’র মাধ্যমে বুকল্যান্ড লাইব্রেরির ২০ হাজারেরও অধিক বইয়ের ১০ হাজারের বেশি বই ডিজিটাল অ্যাপে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘরে বসে পাঠক অ্যাপসটি ব্যবহার করে তার পছন্দের বই খুঁজে নিতে পারবে। বই বা লেখকের নাম লিখে সার্স করলেই সেই বইটি লাইব্রেরির কোন সেলফে আছে সেটা পাঠক নিজেই জানতে পারবে। এছাড়া এই অ্যাপে সদস্য হয়ে বই রিকোয়েস্ট করে পাঠক ঘরে বসেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হাতে পেয়ে যাবেন লাইব্রেরির বইটি। রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকার মধ্যে এই সুবিধা দেওয়া হবে সম্পূর্ণ ফ্রি। এছাড়া সারা বাংলাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও সুযোগটি চালু থাকবে।
আয়োজনে অ্যাপস ব্যবহারের সুবিধা তুলে ধরেন ‘আলোর ফেরী’ অ্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা বাবুল মৃধা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বুকল্যান্ড জার্নালের সম্পাদক ফারহানা হাসনা তুলি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২১
এইচএমএস/এএটি