ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাভারে মিক্সার কারখানার দূষণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ

সাগর ফরাজী, সাভার করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
সাভারে মিক্সার কারখানার দূষণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ

সাভার (ঢাকা): সাভারের শেষ সীমানা বিরুলিয়া। এ এলাকায় ফসলি জমি ও বাসাবাড়ির পাশে মিক্সার কারখানা থাকায় শব্দ ও দুর্গন্ধযুক্ত পানির কারণে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

বর্তমানে এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই কারখানাগুলো।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিরুলিয়ায় দু'টি কারখানার কারণে অনেক ধুলা-বালির সৃষ্টি হয় যা আবাসিক এলাকার চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। এসব কারখানাগুলোতে শিশু শ্রমিকরাও কাজ করে যা অন্যায়। এছাড়া সড়কে মিক্সার কারখানার গাড়িগুলো যাতায়াতের সময় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।

সরজমিনে বিরুলিয়ার খেয়াঘাট এলাকা অবস্থিত দু’টি কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, পরিবেশ দূষণের এমন বেহাল চিত্র। সেখানে একটি কারখানার কাজ পুরোদমে চলছে। পাথরগুলো নিয়ে যাচ্ছে শিশুরা সেই পাথরগুলো আবার মেশিনের ভেতরে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। মেশিনের প্রচণ্ড শব্দে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকায় দায়। এছাড়া মেশিন থেকে নিমিত্ত দূষিত পানি যাচ্ছে পাশের ফসলি জমিতে।

জানা গেছে, নামসর্বস্ব এসব অবৈধ কারখানা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি অনুমতি ছাড়পত্র ছাড়ায় চালিয়ে আসছে। শিশু-কিশোরা যখন লেখাপড়া করবে, তখন এই কারখানাটি তাদের টাকার লোভ দেখি তারা অল্প ব্যয়ে শ্রমিক জোগাড় করে নিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির বাংলানিউজকে বলেন, এই মিক্সার কারখানার শব্দ ও ময়লা পানির দুর্গন্ধে এখানে বসবাস করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘরের জানালা খোলা যায় না। দুর্গন্ধে আমার ছেলে-মেয়ের মাঝে মধ্যে ডায়রিয়া আর বমি হয়ে থাকে। এই কারখানার দুর্গন্ধে ও শব্দে আমাদের বসাবাসের অনেক অসুবিধা হচ্ছে।

কারখানাটির পাশেই বাসা রহমতুল্লাহর। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এতো দুর্গন্ধ ও শব্দ এই কারখানার, আর থাকতে পারছি না। বাড়ির বাহিরে তো যাওয়া দূরের কথা বাড়ির ভেতরে থাকাও অসম্ভব। আমাদের পাশের আবাদি জমিগুলোর খুব খারাপ অবস্থা।
আরেক বাসিন্দা রাবেয়া বাংলানিউজকে বলেন, এই কারখানার অত্যাচারে আমাদের বাড়ি ছাড়তে হবে। কে শোনে কার কথা, এতো বলার পরও কারখানার মালিকের গায়ে কথা লাগে না। নিষেধ করলে ওই মালিকের আবার বড় বড় কথা বলে। আমরা সবাই মিলে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি।

একটি কারখানার ম্যানেজার শাওন বাংলানিউজকে বলেন, মিক্সার করি, আমরা রাবিসগুলো পরিষ্কার করি। এটি নিয়ে তো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। এলাকাবাসী বলছে আমরা নাকি ধুলাবালি উড়াই। আমরা তো সারাদিন পানি নিয়ে কাজ করি তাহলে ধুলো উড়বে কোথা থেকে। এছাড়া আমরা তো পানিই পাইনা মানুষের ক্ষেতে পানি যাবে কি করে। বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন বাংলানিউজকে বলেন, কারখানাগুলো গ্রামের ভেতরে গড়ে উঠেছে এগুলো ঠিকনা। আর আমার এরিয়ায় কোনো প্রতিষ্ঠান করতে হলে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন। কিন্তু তারা কোনো ট্রেড লাইসেন্স নেয়নি। এলাকাবাসী ইউএনও ও আমার কাছে অভিযোগ দিয়েছে। ইউএনও মহদয়ের সঙ্গে আমি কথা বলেছি প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম আরা নিপা বাংলানিউজকে বলেন, আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।