ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাগলা নদীর রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা, বিপাকে ৫ শতাধিক মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২১
পাগলা নদীর রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা, বিপাকে ৫ শতাধিক মানুষ বন্ধ করে দেওয়া রাস্তা। ছবি: বাংলানিউজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে পাগলা নদীতে যাতায়াতের  রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এর প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।

তিন দিন ধরে নদীর পানি নিতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তারা।

তাদের অভিযোগ ৭০ বছরের এ রাস্তাটি সোমবার (২৫ জানুয়ারি) স্থানীয় কামাল উদ্দিনের স্ত্রী বেড়া দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন গ্রামটির পাঁচ শতাধিক মানুষ।

অভিযোগে জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের কালুপুর গ্রামের উত্তর পাড়ার পাঁচ শতাধিক মানুষ পাগলা নদীর উপর নির্ভরশীল। গ্রামবাসী এ গ্রাম থেকে ওই রাস্তা ব্যবহার করে নদীর উভয়পাড়ে চাষাবাদ করে এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী সরাসরি নদীর পানির উপর নির্ভরশীল। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র হওয়ায় এরা খাবার পানি ছাড়া গোসল ও সব কাজে নদীর পানির উপর নির্ভরশীল। রাস্তাটির সামান্য অংশ কামালউদ্দিনের জমিতে পড়ে যাওয়ায় হঠাৎ করে রাতারাতি সেই জায়গাটি ঘিরে দিয়ে রাস্তাটি স্থানীয়ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

গ্রামের তাসির উদ্দিন জানান, তার বাড়ির সামনের অধিকাংশ পরিবারই প্রয়োজনীয় পানি না পেয়ে তার বাড়ি থেকে পানি নিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন। স্থানীয়দের পানির অভাবে দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

গ্রামের সাথি আক্তার জানান, তিন দিন ধরে পানির অভাবে গোসল করতে পারেননি তিনি।

অপর গ্রামবাসী সেমালী জানান, পানি ছাড়া কি এভাবে জীবনযাপন সম্ভব? তিনি আরও বলেন, এমনিতেই তাদের সংসার চলা দায় তার উপরে পানির সমস্যা। এখন হঠাৎ করে কিভাবে টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করবেন?

এদিকে গ্রামের লিলি বেগম জানান,৭০ বছর আগের রাস্তা এভাবে ঘিরে দিয়ে গ্রামের লোকজনকে বিপদে ফেলে দিয়েছে। এর বিচার চাই এবং দ্রুত রাস্তা খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানাই।

গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও ইউসুফ আলীর প্রশ্ন, উপজেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অভিযোগ দেওয়া হলেও কাজ হয় না। ঘটনাস্থল মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে হলেও প্রশাসনের কেউ এখনো ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের অন্যতম অংশীদার ইমন বিশ্বাস দাবি করেন, প্রয়াত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের সময় ভূমি অফিসের সহায়তায় জমি চিহ্নিত করে রাস্তার যে অংশটুকু তাদের জমিতে পড়েছে শুধু সেটুকুই তারা ঘিরে নিয়েছেন। তার দাবি স্থানীয়দের ধারাবাহিক হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এ নিয়ে শিবগঞ্জ থানায় তারা একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন। তারপরও পাশের জমির মালিক দুই হাত জমি দিলে জনস্বার্থে তারাও দুই হাত জমি দিতে সম্মত আছেন।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাকিব আল রাব্বি এ ধরনের একটি অভিযোগ পাওয়ার বিষয় স্বীকার করে জানান, যেহেতু ঘিরে নেওয়া জমি এবং গ্রামটি দুর্লভপুর এবং শ্যামপুর এ দুই ইউনিয়নে। সেহেতু আগামী দুই দিনের মধ্যে ওই দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দ্বয়কে সমস্যা সমাধানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেইসঙ্গে তিনি বিষয়টি মনিটরিং করছেন।

জানা যায়, এ নিয়ে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ৫৩ গ্রামবাসী স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং দুলর্ভপুর ও শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।