ঢাকা: ‘দক্ষিণ এশিয়ার সকলের ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও অসমতা ঐক্যবদ্ধভাবে দূর করি’ শীর্ষক মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে করোনা ভাইরাসের টিকা সকলের জন্য উন্মুক্ত ও সহজলভ্য করার দাবি জানানো হয়েছে। কর্মসূচী থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা বাড়ানো ও কাজের সুযোগ তৈরিসহ বৈষম্য ও অসমতা দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে যৌথভাবে এই কর্মসূচীর আয়োজন করে সাউথ এশিয়ান অ্যালান্স ফর পভার্টি ইরাডিকেশন (স্যাপি), ফাইট ইন ইকুয়ালিটি অ্যালান্স, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস), ইনসিডিন বাংলাদেশ, ভয়েস, জনউদ্যোগ ও অক্সফাম। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিএনপিএস’র উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি)’র নির্বাহী পরিচালক নূমান আহম্মেদ খান, ইনসিডিন’র নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মুসতাক আলী, ভয়েস’র নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ ও প্রতিনিধি আফতাব খান শাওন, জনউদ্যোগের তারিক হোসেন, ইনসিডিন প্রতিনিধি শিপন আহম্মেদ, আদিবাসী নেতা হরেন সিং, সাবেক ছাত্রনেতা মানবেন্দ্র দেব প্রমুখ।
সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার জনগোষ্ঠী জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও লিঙ্গ নির্বিশেষে বৈষম্যের শিকার। এই বৈষম্যগুলো সামাজিক, অর্খনৈতিক, রাজনৈতিক কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। ওর্য়াল্ড ইকোনোমিক ফোরামের মত ফোরামগুলো ধনীদেশগুলোর স্বার্থরক্ষা করে চলেছে। যে কারণে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিশ্বের ১৯৩টি দেশ অসমতা দূরীকরণে সংকল্পবদ্ধ হলেও ধনী দরিদ্রের বৈষম্য প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে, যা করোনা মহামারিকালে আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাই অসমতা দুর করতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ প্রণোদনা বাড়ানোসহ কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
পরিবেশ আন্দোলনের নেতা নূমান আহম্মদ খান বলেন, এসডিজির আওতায় নিজের দেশ এবং অন্য দেশের মধ্যকার অসমতা দূর করার জন্য প্রত্যেক সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তা সত্ত্বেও অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সরকারসমূহের কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি রয়েছে। বৈষম্য কমাতে সরকার ও জনগণের উভয়েরই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার আহ্বান জানান তিনি।
ইনসিডিন’র মুসতাক আলী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় লিঙ্গ ভিত্তিক মজুরির পার্থক্য সবচেয়ে প্রকট এবং এখানে লিঙ্গভিত্তিক শ্রমে নিযুক্তির পরিমাণেও পার্থক্য অনেক বেশি, যা দিন দিন বেড়েই চলছে। স্বল্প সংখ্যক ক্ষমতাবানের হাতে সম্পদ ও ক্ষমতা কুক্ষিগত হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা করোনার টিকা সবার জন্য উন্মুক্ত ও সহজলভ্য করাসহ ধনী এবং দরিদ্রদের মধ্যকার ব্যবধান কমানোর জন্য মজুরি বৈষম্য কমানো, নারীর প্রতি বৈষম্য কমানো, দেশীয় কর রাজস্ব সচল, ধনী ব্যক্তি ও কোম্পানির প্রতি অন্যায্য কর ছাড় বন্ধ, ধনী ব্যক্তি ও কোম্পানির ন্যায্য ভাগ পরিশোধ, জনস্বাস্থ্য শিক্ষা পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বিনিয়োগ বাড়ানো এবং সকলের জন্য সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতসহ জলবায়ু বিপর্যয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২১
এসই/কেএআর