খুলনা: আমার কারো সঙ্গে শত্রুতা নেই। সবাই আমার মেয়ে ছোঁয়াকে অনেক ভালোবাসতো।
খুলনায় নিখোঁজের ছয়দিন পর মরদেহ পাওয়া যাওয়া ৮ বছরের শিশু অঙ্কিতা দে ছোঁয়ার বাবা সুশান্ত দে বিলাপ করে এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে মহানগরীর দৌলতপুর পাবলার বণিকপাড়ার বাসিন্দা সুশান্ত দে বাংলানিউজকে বলেন, গত ২২ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে দৌলতপুর থানার পাবলা বণিকপাড়ার মৌচাক টাওয়ারের সামনে থেকে ছোয়া হারিয়ে যায়। আমার তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোনো সন্ধান মেলেনি। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ার) দৌলতপুর পাবলা বণিকপাড়ার কালী মন্দিরের পাশে বীণাপানি ভবনের নিচতলা থেকে দুর্গন্ধ পান স্থানীয়রা। পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে বাথরুমের মধ্যে থেকে ছোঁয়ার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে। আমার মেয়ের হাত বাঁধা ছিলো। তার গলায় দাগ ছিলো। তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি দৌলতপুর বাজারের বৈদ্যুতিক সামগ্রী দোকানের কর্মচারী। সকালে কাজে বের হয়ে যাই আর রাতে ফিরি।
কারা হত্যা করতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কোনো শত্রু ছিলো না। আমার অবুঝ মেয়েকে কে বা কারা হত্যা করেছে তা আমি বুঝতে পারছি না। মেয়ের মরদেহ যেখানে যাওয়া গেছে আমার বাসা থেকে তা একশত গজ দূরে। আমার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। ও খুব শান্ত সবসময় ঘরে থাকে। ছোঁয়া খুব চঞ্চল ও খেলা প্রিয় ছিলো। সারাদিন ছোটাছুটি করতো। মেয়ের হত্যার বিচার চাই।
ছোঁয়ার বাবা বলেন, মেয়ের মরদেহ পাওয়ার পর বীণাপানি ভবনের মালিক প্রভাত রুদ্র ও যেখানে মরদেহ পাওয়া যায় তার পাশের পার্লারের মালিক মুক্তিসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ছোঁয়ার মামী শান্তনা সাধু জানান, মেয়ে হারিয়ে ছোঁয়ার মা শিমুল দে ও বোন অন্তরা দের আহাজারি কোনো কিছুতেই থামছে না। কোনো শান্তনাই তাদের দিতে পারছে না স্বজনরা।
এলাকাবাসী জানান, গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে ছোঁয়া বাড়ি হতে বের হয়ে পাশের স্থানীয় গোলামের মাঠে খেলতে যায়। গোলামের মাঠের সিসি ক্যামেরা ফুটেজেও তা দেখা গেছে। তবে সেখানে ছোঁয়া কিছু সময় অবস্থান করে। সেখানে থেকে সে বের হওয়ার পর আর বাড়িতে ফেরেনি। তবে এলাকাবাসী ধারণা করছেন, ছোঁয়া ধর্ষণের শিকার হতে পারে। যে কারণে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার ছোঁয়া নিখোঁজ হয়েছিল। তাৎক্ষণিকভাবে জিডি করেছিলেন ছোঁয়ার বাবা সুশান্ত দে। বৃহস্পতিবার ছোঁয়ার মরদেহ পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বীণাপানি ভবনের মালিক, এক পার্লারের মালিকসহ আশপাশের ৬জনকে আটক করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই ছোঁয়া হত্যার রহস্য উন্মোচিত হবে।
ওসি বলেন, ছোঁয়ার মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া চলছে। রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ধর্ষণ ঘটনা ঘটেছে কিনা বলা যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
এমআরএম/ওএইচ/