ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঈশ্বরদীতে স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপের মামলায় স্বামী জেলহাজতে 

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
ঈশ্বরদীতে স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপের মামলায় স্বামী জেলহাজতে  প্রতীকী ছবি

পাবনা (ঈশ্বরদী): ভাইকে বিদেশে পাঠানোর জন্য শ্বশুরের কাছে ৬ লাখ টাকার দাবি করেন জামাই। অসহায় শ্বশুর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নববধূ মিতু খাতুনের (১৯) মাথার চুল-ভ্রু কেটে মুখ এসিড দিয়ে ঝলসে দিয়েছেন পাষণ্ড স্বামী।

 

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) জামাই আরিফ হোসেনের  (২২) বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।  

তিনদিন আগে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে ঈশ্বরদী পৌর শহরের বাবুপাড়া আব্দুল লতিফের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

মামলার সূত্রে জানা যায়, মাত্র ২ মাস ৭ দিন আগে ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের আড়ামবাড়িয়া গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে মিতু খাতুনের সঙ্গে পৌর এলাকার বাবুপাড়া মহল্লার আব্দুল লতিফের ছেলে আরিফের যৌতুকবিহীন শর্তে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকদিন পর থেকেই আরিফ মিতুর কাছে যৌতুক দাবি করে নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি ছোট ভাই আলমগীরকে বিদেশ পাঠানোর জন্য টাকার প্রয়োজন হওয়ায় আবারও স্ত্রীর মাধ্যমে শ্বশুরের কাছে ৬ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন আরিফ। টাকা না দেওয়ায় আরিফ ক্ষিপ্ত হয়ে মিতুকে নির্যাতন শুরু করেন।  

চলতি মাসের ২৫ জানুয়ারি রাতে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মিতুকে খাওয়ায় আরিফ। এরপর অচেতন হয়ে পড়লে মাথার চুল ও চোখের ভ্রু কেটে মুখে এসিড মাখিয়ে দেওয়া হয়। এতে মুখ জ্বালাপোড়া শুরু হলে মিতু চিৎকার করতে থাকেন। এসময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তার বাবার বাড়িতে খবর পাঠানো হয়।
 
আহত মিতু খাতুন পাষণ্ড স্বামী আরিফের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।  

আহত মিতুর বাবা মজিবর রহমান বাংলানিউজকে জানান, যৌতুকের জন্য একটি মেয়েকে হত্যার উদ্দেশে ওষুধ লাগিয়ে মুখ পুড়িয়ে দেওয়াটা কল্পনার বাইরে। মেয়েকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে তিনদিন পর বৃহস্পতিবার বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর বিকেলেই জামাই আরিফের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির প্রত্যাশায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) ফিরোজ কবীর বাংলানিউজকে জানান, আহত মিতুর বাবা বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ার পর মামলা নথিভুক্ত করা হয়। আসামি আরিফকে শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।