ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুষ্টিয়ায় ফসল ও আবাদি জমি রক্ষায় মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
কুষ্টিয়ায় ফসল ও আবাদি জমি রক্ষায় মানববন্ধন মানববন্ধন। ছবি: বাংলানিউজ

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় কৃষি জমি ডিসিআর ও স্থায়ী বন্দোবস্ত নিয়ে প্রায় শতাধিক ভূমিহীন পরিবার বসবাস এবং কৃষিকাজ করে আসছিলো। বর্তমানে জমিতে শষ্য, রায়, কলাবাগান, খেসারি, মটরশুঁটি, গমসহ নানাবিধ ফসল রয়েছে।



কিন্তু ৩০ বছর পরে হঠাৎ করে স্থানীয় বালুমহাল ওই জমির ইজারাদার দাবি করে ফসলসহ মাটি কেটে ভাটায় বিক্রি করছে। ফলে নিজেদের দাবি করে ফসল ও আবাদী জমি রক্ষায় মানববন্ধন করেছে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার হিজলাবট চরের ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা।

শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে হিজলাবট আবাসন এলাকায় ফসলি জমিতে মানববন্ধন করেন তারা।

জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকায় হিজলাবট বালুমহাল ইজারা পায় কুমারখালীর সদকী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাথরবাড়িয়া গ্রামের মৃত আমদ আলীর ছেলে মাসুদ রানা। তার ব্যবসায়ী পার্টনার খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আক্তার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মাছুম মুর্শেদ শান্ত।

বালুমহালের শর্ত অনুযায়ী নদীর গভীর থেকে বালু কাটার নিয়ম থাকলেও ইজারাদার ৩০ বছর ধরে জমে থাকা নদীর পাড়ের মাটি ও ফসল কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়ায় মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীরা।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, ৩০ বছর ধরে তারা জমি চাষ করছেন। এত বালু কাটল, কিন্তু কোনোদিন কেউ এখানকার মাটি কাটেনি। এবারই ফসলসহ মাটি কাটে নিচ্ছে ওরা। কিছু বললেই বলে হ্যান্ডক্যাপ পড়ায়ে নিয়ে যাব। জমির ফসল দিয়েই সংসার চলে আমাদের।

হিজলাবট চরের আদর্শ গ্রামের রহমতের স্ত্রী খুশি বলেন, আমরা আবাসনে বাস করি। নদীর মাঝখানে সরকার আমাদের জমি দেছে। ওরা জোর করে কেটে নিচ্ছে। বাধা দিতে গেলে ইউএনও প্রশাসনকে নিয়ে এসে ভয় দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন, ইউএনও যদি প্রশাসন নিয়ে এমন করে তাহলে সরকার আমাদের বিষ কিনে দিক, খ্যায়া মরে যাই। তাছাড়া কি করব, আমরা গরিব মিছকিন।

খানপুর মৌজার জেলে সামছুলের স্ত্রী বলেন, আমার খেসারি-মটর কাটে নেচ্ছে। বাবুল আক্তার, শান্তর কাছে গিছি, মাসুদের পাও ধরিছি কিচ্ছু হচ্ছে না। আমার স্বামী প্রতিবাদ করায় পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। জেল খাটতেছে। আমার চার ছোয়াল পাল নিয়ে না খেয়ে আছি।

তিনি আরো বলেন, টিএনওর কাছে গিছি, সে বলেছে চরে কোনো মাটি থাকবে না, যে সরকার বসায়ছে, সে সরকার তুলে দিবে।
৭০ বছর বয়সের ওমর আলী বলেন, ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত নিয়ে ৩১ শতক জমি পেয়েছি। সেখানে ঘর, দোকান ও চাষাবাদ করে খায়। মাটি কাটে নিলে না খেয়ে মারা যাব।

বালুমহালের ইজারাদার মাসুদ রানা বলেন, দুই লাখ টাকার ঘাট ২৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছি। প্রশাসন যেখানে দেখায়ে দিছে, সেখানে কাটছি। অবৈধ না বৈধ তা আমার জানা নেই।

খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বালুমহালের এরিয়ার মধ্যে বালু থাকলে বালু কাটবে, মাটি থাকলে মাটি কাটবে ইজাদার। সেখানে আমার কিছু করার নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।