ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিটিং সার্ভিস চালুর দাবি পরিবহন শ্রমিকদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২১
সিটিং সার্ভিস চালুর দাবি পরিবহন শ্রমিকদের ...

ঢাকা: রাজধানীর সড়কে গণপরিবহনের চলাচল একেবারে সীমিত রয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানি বাস সড়কে কয়েকটি করে চলতে দেখা গেলেও অধিকাংশ বন্ধ রেখেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

তবে বন্ধ থাকা পরিবহনগুলো অধিকাংশই মিরপুর রুটের।

পরিবহন শ্রমিকদের দাবি, রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে বাকবিতণ্ডা। এতে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে ত্যাক্ত-বিরক্ত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। যদি নগরীতে পুরনারায় সিটিং সার্ভিস চালু হয় তবে সব পরিবহন শৃঙ্খলার সঙ্গে চলাচল করবে। মূলত এই কারণেই কিছু বাসের চলাচল থাকলেও বেশিরভাগ বাস বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে, রাজধানীতে কম সংখ্যক বাসের চলাচল থাকায় ভোগান্তীতে পড়েছেন যাত্রীরা। রাজধানীর বাস স্ট্যান্ডগুলোতে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে বাসের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে তাদের। যাত্রীরা বলছেন, সিটিং সার্ভিস বন্ধ করায় একদিকে যাত্রীদের সুবিধা হয়েছে। কারণ ১০ টাকার ভাড়াও সিটিং সার্ভিসগুলো ২০ টাকা রাখতেন। বাসে উঠলেই ২০ টাকা। ভাড়া বাড়ানো হয়েছে এটাও সাধারণ মানুষের জুলুম হয়ে যাচ্ছে বলে যানান তারা।

পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, শ্রমিকদের সিটিং সার্ভিসের দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অন্যায় দাবি।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

এর আগে, গত ১৪ নভেম্বর থেকে রাজধানীতে সকল ধরনের সিটিং সার্ভিস অথবা গেটলক সার্ভিস বাসের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। সব পরিবহন ভাড়ার নতুন কাঠামো অনুযায়ী চলবে বলেও নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সিটিং সার্ভিস ঠিক রাখার দাবিতে পরিবহনগুলোর চালকরা বাস বন্ধ রেখেছে। তবে সব পরিবহনের কিছু বাস সড়কে চলাচল করছে।

পরিবহন চালকরা জানায়, রাজধানীর মিরপুর রুটের বেশিরভাগ বাস বন্ধ রয়েছে। মনজিল এক্সপ্রেস পরিবহন, বিকাশ, প্রজাপতি, মিরপুর লিংক সার্ভিসসহ বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাস অল্প সংখ্যক চললেও বেশিরভাগ বন্ধ রয়েছে। এসব বাসের অধিকাংশই মিরপুর থেকে ছেড়ে আসতো।

প্রজাপতি বাসের চালক রবিন বাংলানিউজকে বলেন, জ্বালানী তেলের দাম বাড়ায় আমাদের খরচ বেড়ে গেছে। এদিকে বিআরটিএ ভাড়া বৃদ্ধি করে ভাড়ার নতুন কাঠামো দিয়েছে। কিন্তু ওই ভাড়া তুলতে গেলে যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হচ্ছে। যাত্রীরা সরকারের নির্ধারিত বাড়তি ভাড়া দিতে চাচ্ছেন না।

এসব কারণে মিরপুর এলাকার পরিবহন শ্রমিকরা সিটিং সার্ভিস চালুর দাবিতে বাস চালানো বন্ধ রেখেছেন।

শ্রমিকরা বলছেন, এই বিষয়টি সড়ক-পরিবহন মালিক সমিতিতে জানানো হয়েছে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সিন্ধান্ত আসেনি।

মনজিল এক্সপ্রেস পরিবহনের কয়েকটি বাসের মালিক মো. সুমন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মালিক সমিতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। কিন্তু এখনও কোনো সিন্ধান্ত আমরা পাইনি।

পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, পরিবহন শ্রমিকদের সিটিং সার্ভিসের চালুর দাবিকে বাস মালিকদের একটি অংশ সমর্থন করছে। তারা শ্রমিকদের অন্যায় দাবিকে প্রশ্রয় দিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করতে চাইছেন। তাদের এই দাবিকে প্রশ্রয় দিলে গণপরিবহনের নৈরাজ্য বন্ধ করা সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজধানীসহ সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল করবে। যারা সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়কে বাস নামাবে না বা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, শ্রমিকদের অন্যায় দাবি মেনে নেওয়া হবে না। যেসব মালিক শ্রমিকদের অন্যায় দাবিকে প্রশ্রয় দিয়ে বাড়তি মুনাফা অর্জন করতে চাইবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন >>>

রাজধানীর বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল বন্ধ
ধর্মঘটে মিরপুরবাসীর ভোগান্তি চরমে

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২১
এসজেএ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।