পটুয়াখালী: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্নিমা ও পূজায় প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয় সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায়। কিন্তু এবার করোনার যাঁতাকলে সেই চিরচেনা আমেজ নেই সৈকত ও আশপাশের এলাকায়।
যদিও বিগত ২ বছর করোনার কারণে সম্পূর্ণ বন্ধ ছিলো রাশের সকল আয়োজন। এবার ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না। তাই এই উপলক্ষ্যে তেমন পর্যটক নেই কুয়াকাটায়। তবে শুক্রবার ছুটির দিনে পর্যটক বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিগত বছরগুলোতে অনেক পর্যটক আসতে পারেনি তাঁরা অনেকেই ইতোমধ্যে আসতে শুরু করেছে। মূলত রাশ মেলা কুয়াকাটার শত শত বছরের একটি ঐতিহ্য।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) রাসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে শুক্রবার সকালে পূণ্যস্নানের মধ্যদিয়ে এ পূজার সমাপ্তি ঘটবে। এজন্য সৈকত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
তবে তিনদিন ব্যাপী ১৭, ১৮ ও ১৯ তারিখে রাশ মেলার হওয়ার কথা থাকলেও জেলা প্রশাসন কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় তা বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় বিধায় রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা ও পুন্যস্নান করা হবে। রাসপূর্ণিমা উপলক্ষে কোনো ধরনের মেলার আয়োজনের অনুমতি দেননি।
বিগত বছরগুলোতে ঝাঁক জমকপূর্ন তিনদিন ব্যাপি রাশ মেলা অনুষ্ঠিত হলেও ২০১৯ সালে দূর্যোগের কারনে ও ২০ সালে করোনার কারনে মেলা বন্ধ থাকলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের আয়োজন ছিল সীমিত আকারে।
কুয়াকাটা সৈকতে শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের পুরোহিত ভ্রমচারি শিশির বলেন, তাদের দেবতা শ্রী কৃষ্ণ এ তীর্থস্থানে এসে পূণ্যস্নান করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ এখানে জড়ো হয়ে পূণ্যস্নান করেন।
তার মতে এই পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে সব পাপ মোচন হবে এবং মনষ কামনা পূরণ হবে। তাই ঈশ্বরকে খুশি করতে মূলত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বহুবছর ধরে জাকজমকপূর্ণভাবে এ মেলা করে আসছেন।
কুয়াকাটা সৈকতে শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক ইন্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মন্ডল বাংলানিউজকে জানান, রাশ পূর্নিমা উপলক্ষে ইতোমধ্যে আমাদের সকল প্রস্তুতি শেষের পথে। মন্দিরগুলোতে সৌন্দর্যের কাজ, প্যান্ডেল, গেট সহ বিভিন্ন কাজ ইতোমধ্যে শেষ করে ফেলেছি। করোনা কালীন সময়ের কথা মাথায় রেখে মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব সহ সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, কুয়াকাটায় রাস পূর্ণিমা ও পূজা উপলক্ষে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, র্যাব সহ পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন থাকবে। করোনার কারনে মেলা না হলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২১
আরইউ