ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় অন্তর্ভুক্তি জরুরি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২১
প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় অন্তর্ভুক্তি জরুরি

ঢাকা: প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে সরকার বিশেষ ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি, বিনা সুদে ব্যাংক থেকে ঋণের ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সুবিধাসহ নানা প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিলেও এখনো এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জসমূহের মধ্যে রয়েছে- প্রতিবন্ধীদের আর্থিক সম্পৃক্ততায় অন্তর্ভুক্তি, দক্ষতা উন্নয়নে কার্যকরী পদক্ষেপ, যথাযথ কর্মসংস্থান, প্রতিবন্ধীবান্ধব কর্ম পরিবেশের ব্যবস্থা নেওয়া।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, তাদের আর্থিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে সমাজের মূল ধারায় অন্তর্ভুক্তিকরণের বিষয়টি, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ এসডিজি অর্জনে সমাজে পিছিয়ে পড়া সব জনগোষ্ঠীকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়াকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।  

’মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিবন্ধীদের নেতৃত্ব ও অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক এক সংলাপে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। কক্সবাজারের একটি হোটেলে এ সংলাপের আয়োজন করা হয় বলে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় ব্র্যাক। ৩০তম আন্তর্জাতিক ও ২৩তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল-হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন ও  বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মানবিক সহায়তা কর্মসূচি (এইচসিএমপি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।  

এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয়: ’কোভিডোত্তর বিশ্বের টেকসই উন্নয়ন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ’।

এতে বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামছু-দ্দৌজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাসিম আহমেদ, ব্যুরো অব পপুলেশন, রিফুইজিস, অ্যান্ড মাইগ্রেশনের রিফুইজি সমন্বয়কারি ম্যাকেঞ্জি রো, হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনালের কর্মসূচি পরিচালক রাজেশ চন্দ্র, ব্র্যাকের মানবিক সহায়তা কর্মসূচি (এইচসিএমপি)-এর প্রধান রবার্ট শিলা মুথিনি, ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মনসুর চৌধুরী, প্রটেকশান ওয়ার্কিং গ্রুপ (পিডব্লিওজি)-এর সিনিয়র প্রটেকশান অফিসার লরেঞ্জো লিওনিল, আইসিসিও কোঅপারেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ সাকেব নবি প্রমুখ।

প্রতিবন্ধীসহ দাতা সংস্থা, মানবিক উন্নয়ন সংস্থা এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে ১০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি সরাসরি ও অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তি’-শীর্ষক গবেষণা সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরেন হিউম্যানিট্যারিয়ান পলিসি গ্রুপের গবেষণা কর্মকর্তা আলেকজান্দ্রা স্পেন্সার।

এতে জানানো হয়, ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস ফর দি কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিট্যারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ইউএনওসিএইচএ)-২০২১ তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বের ২৩৫.৪ মিলিয়ন মানুষের বিভিন্ন ধরনের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন হয়, যাদের মধ্যে ১৫ শতাংশই প্রতিবন্ধী। বেসরকারি সংস্থা রিচ পরিচালিত ২০২১ সালের গবেষণা সমীক্ষা অনুযায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ সংখ্যা ১২ শতাংশ।   

রিচ সমীক্ষায় বলা হয়, ৯২ শতাংশ মানবিক কর্মীরা মনে করেন, দুর্যোগকালীন সময়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সঠিক বা যথাযথভাবে সহায়তা পায় না। তাই দুর্যোগে প্রস্তুতি, সাড়া ও লাঘব করার ক্ষেত্রে স্ব স্ব সংস্থার নীতিমালার উন্নয়ন ও সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন জরুরি। এর পাশাপাশি সম্মুখ সারির কাজে শ্রমিক নিয়োগ এবং সংস্থার অংশীদারদের মধ্যে প্রতিবন্ধী কর্মী অন্তর্ভুক্ত করার ওপর সমীক্ষায় জোর সুপারিশ করা হয়।

আলোচনায় বক্তাদের কাছ থেকে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে আরও বেশ কয়েকটি সুপারিশ উঠে আসে। এর মধ্যে রয়েছে তাদের এ সংক্রান্ত যেসব সরকারি সুযোগ-সুবিধা আছে তা যথাযথ বাস্তবায়ন, প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিবন্ধীদের উপযোগী যাতায়াতের ব্যবস্থা করা, তাদের জীবন মান উন্নয়নে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ইত্যাদি।  

এদিকে এদিন কক্সবাজারের বেস্ট ওয়েস্টার্ন হোটেলের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ’ডিজএবিলিটি ইনক্লুশন ইনোভেশন’ শিরোনামে এক মেলার আয়োজন করা হয়। এতে প্রতিবন্ধীদের তৈরি সামগ্রী দিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্টল সাজানো হয়। আলোচনা শেষে আসা অতিথিরা এসব স্টল পরিদর্শন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২১
এমআইএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।