কক্সবাজার: অবশেষে কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটে বাঁকখালী নদী দখল ও প্যারাবন কেটে স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম।
তবে মামলায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেক প্রভাবশালীর নাম বাদ পড়েছে উল্লেখ করে তাদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’র প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ।
তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালীদের আইনের আওতায় আনা না হলে বাঁকখালী নদী ও প্যারাবন রক্ষা করা যাবে না।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) কক্সবাজার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কস্তুরাঘাট এলাকায় অবৈধভাবে প্যারাবন কেটে বাঁকখালী নদী সংযোগকারী খাল ভরাটের স্থানে অভিযান পরিচালনা করে পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট টিম।
মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, কস্তুরাঘাটে বাঁকখালী নদীর তীরে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘কোস্টাল অ্যান্ড ওয়েটল্যান্ড বায়োডাইভারসিটি প্রকল্প’ কর্তৃক সৃষ্ট কয়েকশ একর প্যারাবনের প্রায় ১৫ হাজার গাছ কেটে প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে এবং কিছু ভরাট করা স্থানে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
রুকন উদ্দিনসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে ৩ থেকে ৪ মাস ধরে প্যারাবন কেটে খালের জায়গা ভরাট করে দখলের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিছু জায়গায় ভরাট করা স্থানে টিনের বেড়া দিয়ে দখল করতে দেখে পরিবেশ অধিদপ্তরের টিম। একই সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে ভরাটের উদ্যোগ দেখে টিমটি।
বাঁকখালী নদী দখল ও প্যারাবন কেটে সাবাড় করায় এজাহারে সাতজনের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন- মহেশখালী কুতুবজোম ইউনিয়নের মেহেদিয়া পাড়া এলাকার রুকন উদ্দিন (৪০), কক্সবাজার সদর ঝিলংজা হাজী পাড়া এলাকার আমীর আলী (৪৫), বদরমোকাম কস্তুরাঘাট এলাকার মো. কামাল ওরফে কামাল মাঝি (৪৮), দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার এবিসি ঘোনা এলাকার মো. ইসলাম ওরফে খোল বাহাদুর (৫২), আলিরজাহান সাহিত্যিকা পল্লী এলাকার আব্দুল মালেক ইমন (৪৩), মহেশখালী চরপাড়া এলাকার মো. ইফসুফ (৪২) ও কস্তুরাঘাটের বদরমোকাম এলাকার মো. ইব্রাহীম (৩০)। এছাড়া অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে ৮ থেকে ১০ জন।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট প্যারাবন কর্তন এবং জলাশয় ভরাট করে দখল ও স্থাপনা নির্মাণ করে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) এর ৫(৪) ও ৬ (ঙ) ধারা লংঘন করে একই আইনের ১৫(১) এর ২ ও ৮ মোতাবেক দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটের বাঁকখালী নদী ও নদীর প্যারাবন রক্ষায় ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২১
এসবি/জেএইচটি