নীলফামারী: নীলফামারী সদর উপজেলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির পাঁচ সদস্যকে আটক ও বোমা-বিস্ফোরক ও পিস্তল উদ্ধার করেছে র্যাব।
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত থেকে শনিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর পর্যন্ত উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নে পুঠিহারী মাঝাপাড়া গ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।
পরে বেলা ১০টার দিকে ওই গ্রামের শরীফুল ইসলাম ওরফে শরীফের (৩২) বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সতেজ একটি বোমা ও তৈরীর সরঞ্জামসহ রায়নিক দ্রব্য, একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বোমাটি ফাঁকা একটি স্থানে বিস্ফোরণ ঘটায় ঢাকা থেকে আসা র্যাবের বিশেষজ্ঞ দল। তবে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শরিফ পালিয়ে যান।
অভিযান শেষে ঘটনাস্থলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের জানান, আটকৃত সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য। আহিদুল বোমা তৈরির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। আটকৃতদের রংপুর র্যাব কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। শরীফকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
সকালে ঘটনাস্থালে আসেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্ণেল এ কেএম আজাদ। তার নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেন র্যাবের পরিচালক গোয়েন্দা লে. কর্ণেল মো. মশিউর, র্যাব-১৩ রংপুরের কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেরদৌসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আহিদুল জেএমবির সামরিক শাখার রংপুর অঞ্চলের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত। তিনি বোমা বিশেষজ্ঞ হওয়ায় নিয়মিত বোমা বানাতেন।
র্যাব ও এলাকাবাসী জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে র্যাবের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের সদস্যরা গ্রামে এসে শরীফের বাড়ি থেকে একটি শক্তিশালী সতেজ বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করে। এ সময় শরীফের স্ত্রী মিনা বেগম (২৮) ও তার শাশুড়ীকে (নাম জানা যায়নি) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে র্যাব।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রউপ বলেন, ‘শরীফের বাড়িটি তদন্তের স্বার্থে স্থানীয় আনছার ও চৌকিদারদের পাহারায় রাখা হয়েছে। সেখানে যাতে কেউ ঢুকতে না পারে সে জন্য আশপাশের লোকজনকে বলা হয়েছে। ’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েক ব্যক্তি জানান, যে বাড়ি থেকে বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে সেটি শরীফের বাড়ি। তিনি আগে উত্তরা ইপিজেডে কাজ করতেন। সে কাজ ছেড়ে রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রসহ বিভিন্ন দিনমজরের কাজ করছেন এখন। বাড়িতে স্ত্রী মিনা বেগম, চার বছরের মেয়ে সুমাইয়া এবং সাত মাসের ছেলে খালিদকে নিয়ে বসবাস করেন।
তারা আরও জানান, শরিফুলের বাবার নাম জহুরুল ইসলাম। বাড়ি জেলা সদরের চড়াইখোলা ইউনিয়নের দারোয়ানী পিলার নামক গ্রামে। ছোটবেলায় তার বাবা-মায়ের মধ্যে সর্ম্পের বিচ্ছেদ ঘটলে পুঠিহারী মাঝাপাড়া গ্রামে নানা সুলতান আলীর বাড়িতে বড় হন। এরপর তার নানা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ওই বাড়িটি করে দেন। সেই থেকে ওই বাড়িতে বসবাস করছেন শরিফুল।
** নীলফামারীর ‘জঙ্গি আস্তানা’য় বোমা সদৃশ বস্তু
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২১
আরএ/এমএমজেড