ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশ-ভারতের অংশীদারত্ব চুক্তিতে সীমাবদ্ধ নয়

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
বাংলাদেশ-ভারতের অংশীদারত্ব চুক্তিতে সীমাবদ্ধ নয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের অংশীদারত্ব চুক্তি, সমঝোতা স্মারক, দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে সীমাবদ্ধ নয়, যেটা আমাদের সম্পর্কের জন্য শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক কাঠামো প্রদান করে থাকে।

সোমবার (০৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস উপলক্ষে দিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

‘মৈত্রী দিবস: বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের খুব বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্কটি গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব আমাদের হৃদয়ে। এই বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় এবং দীর্ঘস্থায়ী থাকবে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও তার সরকার, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং সামগ্রিকভাবে ভারতের জনগণের উদারতার কথা স্মরণ করছি। তারা বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ১০ লাখ উদ্বাস্তুকে বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছেন, মুজিবনগর সরকারের জন্য জায়গা দিয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষে কূটনৈতিক প্রচারণা চালিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অংশীদারত্ব চুক্তি, সমঝোতা স্মারক, দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে সীমাবদ্ধ নয়, যেটা আমাদের সম্পর্কের জন্য আনুষ্ঠানিক কাঠামো প্রদান করে। আমাদের বিস্তৃত অংশীদারত্ব এখন আরও পরিপক্ক, গতিশীলএবং কৌশলগত। আর এই অংশীদারত্ব সার্বভৌমত্ব, সমতা, আস্থা এবং পারস্পরিক সম্মানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সংযোগ ও আদান-প্রদানের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্বের বন্ধন আরও সুদৃঢ়, বহুমুখী ও প্রসারিত হয়েছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূলে এখন জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ, বাণিজ্য, ব্যবসা এবং সংযোগের ওপর আরও মনোনিবেশ করা দরকার, যা উভয়পক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

কোভিড পরিস্থিতি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ এর আরোপিত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও আমাদের দুই দেশের সব স্তরের সম্পর্ক স্থিতিশীল এবং শক্তিশালী রয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় আমাদের মধ্যে সহযোগিতা খুব স্পষ্ট ছিল। মৈত্রী দিবস বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী গতিশীল অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে একটি উপলক্ষ। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, আগামী কয়েক দশক ধরে আমাদের দুই দেশের জনগণ আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণাকে বাস্তবে পরিণত করবে।

অনুষ্ঠানে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের এক ঐতিহাসিক দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। তখন থেকেই উভয় দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক বন্ধন গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক আগামী দিনে আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। বাংলাদেশ জাতিসংঘ থেকে এলডিসি থেকে উত্তরণে তিনি স্বাগত জানান।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহম্মদ ইমরা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক প্রমুখ।

৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস পালিত হচ্ছে। ঢাকা ও দিল্লি ছাড়াও বিশ্বের ১৮টি দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ১০ দিন আগে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২১
টিআর/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।