সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সেই ঘর ফিরে পেয়েছেন আটুলিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বিড়ালক্ষ্মী গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী সালমা খাতুন।
বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশের পর সোমবার (৬ ডিসেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ ন ম আবুজর গিফারীর নির্দেশে আটুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ঘরটি দখল মুক্ত করে চাবি সালমা খাতুনের কাছে বুঝিয়ে দেন।
এছাড়া সেখানে বসবাস করতে কোনো সমস্যা হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয় তাকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত শ্যামনগরের পশ্চিম বিড়ালক্ষ্মী আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিধবা সালমা খাতুনকে একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখানে দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন তিনি। হঠাৎ বড় মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বাড়িতে যান সালমা খাতুন এবং সেখানে ১৫-২০ দিন অবস্থান করেন। এই সুযোগে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক ফারুক তাকে বলেন, ‘তোমার ঘরটা আমরা কিছুদিন ক্লাব হিসেবে ব্যবহার করব, তুমি চলে আসলে ছেড়ে দেব। ’
কিন্তু বাড়ি ফিরে আসার পর সালমা খাতুন দেখেন স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ কামাল ঘরটি দখল করে তার (মেম্বার) এক পাতানো বোনকে সেখানে তুলে দিয়েছেন। পরে জানা যায় ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তারা ওই ইউপি সদস্যের কাছ থেকে ঘরটি কিনে নিয়েছেন।
তখন এ ঘটনায় একাধিক জায়গায় অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বিড়ালক্ষ্মী গ্রামের বিধবা সালমা খাতুন।
এক পর্যায়ে বাংলানিউজে ‘বিধবার আশ্রয়ণের ঘর অন্যের কাছে বিক্রি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেই সংবাদ কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে সোমবার ইউএনও আ ন ম আবুজর গিফারীর নির্দেশে আটুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ঘরটি দখল মুক্ত করে চাবি সালমা খাতুনের কাছে বুঝিয়ে দেন।
এদিকে, ঘর ফিরে পেয়ে সালমা খাতুন বলেন, এখন থাকার একটা জায়গা হলো। ইউএনও স্যারকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে ঘরটা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মিলন হোসেন বলেন, সালমা দীর্ঘদিন পর ঘরটা ফিরে পেয়েছেন। এজন্য উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।
ইউএনও আ ন ম আবুজার গিফারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সালমা খাতুনের ঘরটি বেদখল ছিল এমন খবর দেখে সেটি দখলমুক্ত করে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
এমএমজেড