ঢাকা: ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, কোভিড মহামারির অব্যাহত চ্যালেঞ্জ এবং একটি জটিল বৈশ্বিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
সোমবার (০৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস উপলক্ষে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মৈত্রী দিবস উপলক্ষে ভারতীয় হাইকমিশন এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও সঙ্গীতসন্ধ্যার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, আজ আমরা মৈত্রী দিবস উদযাপন করছি কারণ এদিন ভারত এবং ভুটান প্রথম দেশ হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। দিল্লি এবং ঢাকা ছাড়াও বিশ্বের ১৮টি প্রধান শহরে এই মৈত্রী দিবস উদযাপিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, এত বড় আকারে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে যৌথভাবে এই ধরনের মাইলফলক উদযাপনের চেষ্টা আগে কোনো দেশ করেনি। কোভিড মহামারির অব্যাহত চ্যালেঞ্জ এবং একটি জটিল বৈশ্বিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও, প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে সফর এবং আমাদের সামরিক বাহিনীর মার্চিং কন্টিনজেন্টের একে অপরের বার্ষিক দিবসের প্যারেডে অংশগ্রহণের মতন বিশেষ ঘটনাগুলোতে বন্ধুত্বের প্রতিফলন ঘটে। এটি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ৬ ডিসেম্বরকে এখন থেকে মৈত্রী দিবস হিসেবে ঘোষণার সিদ্ধান্তেও প্রতিফলিত হয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক মানচিত্র বদলে দিয়েছে। এটি আমাদের আদর্শিক মানচিত্রকেও বদলে দিয়েছে। আপনাদের স্বাধীনতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছে যে, অভিন্ন সংস্কৃতি, সভ্যতা এবং ভাষার এই বন্ধন বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর একসঙ্গে থাকতে না পারার মতন মিথ্যা তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করে। আপনাদের মুক্তি সংগ্রামও বর্বরতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের বিজয়ের অনিবার্যতা প্রমাণ করেছিল।
তিনি বলেন, আগামী ৫০ বছরে আমাদের বন্ধুত্বের ভিত্তি এবং আমাদের ইতিহাসকে একসঙ্গে গড়ে তোলার জন্য আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। বিশেষ করে গত এক দশকে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছি। আজ আমাদের দেশগুলো রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক, উন্নয়নমূলক, সাংস্কৃতিক, নিরাপত্তা এবং এমনকি মানুষে-মানুষে সংযোগের ক্ষেত্রেও সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ অংশীদার। আমাদের এখন নিশ্চিত করতে হবে যে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই ইতিহাস যেন বুঝতে পারে। কারণ আজকের তরুণরাই এই অংশীদারিত্বকে অপরিবর্তনীয় করে তুলতে পারবে। এটি হবে সত্যিকার অর্থে সেই লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি শহীদদের জন্য, যারা এই দেশের জন্য তাদের সর্বস্ব দিয়ে গেছেন। যেমনটা করেছে তাদের ভারতীয় মিত্ররা, যারা আমাদের বন্ধুত্বের নামে আত্মত্যাগ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২১
টিআর/এমআরএ