মাগুরা: ৭ ডিসেম্বর মাগুরা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্ত হয় মাগুরা।
মরহুম অ্যাডভোকেট আছাদুজ্জামান ও তৎকালীন মহাকুমা প্রশাসক ওলিউল ইসলামের নেতৃত্বে মার্চের মাঝা মাঝি সময়ে জেলায় সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়।
মাগুরাকে শত্রু মুক্ত করতে শ্রীপুরের আকবর হোসেন মিয়ার নেতৃত্বাধীন শ্রীপুর বাহিনী, মহম্মদপুরের ইয়াকুব বাহিনী, মহম্মদপুর-ফরিদপুর অঞ্চলের মাশরুরুল হক সিদ্দিকী কমল বাহিনী, মাগুরা শহরের খন্দকার মাজেদ বাহিনী এবং লিয়াকত হোসেনের নেতৃত্বে মুজিব বাহিনীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক সাহসী ভূমিকা নিয়ে পাক সেনা ও স্থানীয় রাজাকার আল বদর বাহিনীর সঙ্গে প্রাণপণ যুদ্ধ করেন। গেরিলা বাহিনীর ব্যাপক আক্রমনের মুখে পাকস্তানি বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী নিজনান্দুয়ালী গ্রামসহ বিভিন্ন পাকিস্তানি ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। একই সঙ্গে মিত্রবাহিনীর আগ্রাসনের ভয়ে পাকিস্তানি সেনারা রাতারাতি মাগুরা শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ৭ ডিসেম্বর মাগুরা শত্রু মুক্তির আনন্দে মুক্তিকামি মানুষের ঢল নামে সারা শহরে। জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা মাগুরা। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যমত সংগঠক ভারতের রানাঘাট যুব ক্যাম্পের ইনচার্জ এমপি আছাদুজ্জামান মাগুরার মুক্তি বাহিনীকে দিক নির্দেশনা, যুদ্ধাস্ত্র ও রসদ সরবরাহ করতেন। ৭ ডিসেম্বর বিকেলে সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আছাদুজ্জামান মিত্রবাহিনীর দায়িত্ব প্রাপ্ত সেনাপতি মেজর চক্রবর্তীর সঙ্গে সাজোয়া যানে মাগুরায় প্রবেশ করেন মাগুরা নোমানী ময়দানে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সম্মিলিত কুচকাওয়াজে আছাদুজ্জামান অংশ নেওয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠনিকভাবে মাগুরাকে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে, সকালে জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পতাকা উত্তোলন শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া মহফিল ও আলোচনা সভার মধ্যে দিয়ে মাগুরায় মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সব কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচিগুলোতে অংশ নেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, মাগুরা-২ এর সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট বীরেন শিকদার, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. আশরাফুল আলম, পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল ফাত্তাহ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পংকজ কুন্ডু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুল, জেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রহমানসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
ডিসি ড.আশরাফুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উল্লেখিত ও উপস্থিত নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২১
এসআরএস