লক্ষ্মীপুর: একটি অপহরণ মামলায় দীর্ঘ ২৪ বছর কারাগারে ছিলেন মিলন কামাল। সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
মিলনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর গ্রামে। তার পিতার নাম নুরুজ্জামান।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুসুম আক্তার নামে এক শিশুকে অপহরণের দায়ে ১৯৯৭ সালে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড (৩০ বছর) হয় মিলনের। তখন তিনি যুবক। নিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সাজা হওয়ার পর লক্ষ্মীপুর কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। ২৪ বছর কারাগারে থাকার পর ৬ বছরের সাজা মওকুফ পান মিলন। গত ২৫ নভেম্বর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
মিলনের বয়স এখন ৫৫ বছর। ৩১ বছর বয়সে তিনি কারাগারে যান। বিয়ে করেছিলেন। কারাগারে যাওয়ার ৫ বছরের মাথায় স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। একটি সন্তান ছিল, সেও মারা গেছে। তাই কারাগার থেকে বেরিয়ে বৃদ্ধ মা’সহ বাকি জীবন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন মিলন। বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে জানালে তার কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ভবানীগঞ্জের ওয়াপদা অফিসের পাশে তাহমিদ সুপার মার্কেটে মিলনকে দোকান হস্তান্তর করা হয়। লক্ষ্মীপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এ উপহার তুলে দেন জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ।
এ সময় লক্ষ্মীপুর কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের, জেলার সাখাওয়াত হোসেন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সেলুন দোকান পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে মিলনের মধ্যে। তিনি দোকানের নাম দিয়েছেন ‘মা হেয়ার কাটিং সেলুন’।
সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সমাজসেবা বিভাগের অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির পক্ষ থেকে কারাগারে প্রশিক্ষণ ও জীবিকা নির্বাহের সরঞ্জাম দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে বাড়ি ফিরে তারা সম্মানের সঙ্গে কাজ করে বেঁচে থাকতে পারেন।
লক্ষ্মীপুর কারাগারের জেলার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কারাগারে বন্দিদের চুল কাটতো মিলন। আচার-আচরণ ভাল ছিল। এই দোকানের মাধ্যমে সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে।
জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, মিলন ২৪ বছর জেল খেটেছেন। তিনি যেন আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন। যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের আমরা সুপথে ফিরিয়ে আনবো।
বাংলাদেশ সময়: ০২০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১
এনএসআর