কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’- এর কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাতায়াতের একমাত্র জেটিটি ভেঙে জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ভাঙাচোরা সেই জেটিটি কোনো রকম জোড়াতালি দ্বীপটি দিয়ে পর্যটক যাওয়া-আসা শুরু করে।
কিন্তু ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক দুই দিন আটকে থাকার পর আজ যখন জাহাজে ওঠার জন্য প্রায় দেড় হাজার পর্যটক সেই জেটির ওপর অপেক্ষা করছিল এ দৃশ্য দেখে স্থানীয় অনেকেই ভয় পেয়ে যায়। তাদের গা শিউরে ওঠে। অনেকের শঙ্কা ছিল কখন কি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল এভাবেই চরম ঝুঁকির মধ্যে জেটিতে দাঁড়িয়ে থেকে আটকেপড়া পর্যটকেরা জাহাজে করে টেকনাফ ফিরেছে। তবে, শেষ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। এমন ভীতিকর দৃশ্য দেখে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিব খাঁন নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘ফিরে যাচ্ছে, কিন্তু জেটির নিচের খবর জানলে কেউ হয়তো এভাবে জেটির ওপর ভিড় করতো না। বিপদ না আসার আগে যাত্রী উঠানামায় সতর্ক না হলে দুনিয়া সমান ক্ষতি হয়ে যাবে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পর্যটন ব্যাবসায়। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি’।
জানা গেছে, রোববার থেকে বন্ধ থাকার পর আজ সতর্ক সংকেত তুলে নেওয়ায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে টেকনাফ জেটি থেকে চারটি পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। বিকেলে এসব জাহাজে করে টেকনাফ ফিরেছে আটকেপড়া পর্যটকরা।
হাবিব খান বাংলানিউজকে বলেন, সত্যি আজকের দৃশ্য দেখে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমার বার বার মনে হচ্ছিল কখন জানি জেটিটি ধসে পড়ে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর মোহম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, যারা জেটিটির আগের ভাঙাচোরা দৃশ্য দেখেছে, তাদের সবাই আজকের দৃশ্য দেখে ভয় পেয়েছেন।
জেটি ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন না করলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার করায় আবার পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এতে সেন্টমার্টিনে বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়া দেড় হাজার পর্যটক নিরাপদে টেকনাফ ফিরেছে।
এছাড়াও দুপুরে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী চারটি জাহাজে ৭৭৮ জন পর্যটক সেন্টমার্টিনে গেছেন বলে জানান ইউএনও।
তিনি বলেন, জেটি ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বনের উদ্যোগের পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
এর আগে, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে গত শনিবার বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করে। এরপর দুর্ঘটনা এড়াতে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন, সেন্টমার্টিন-কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন-চট্টগ্রাম-এই তিন নৌপথে চলাচলকারী সব ধরনের পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১/আপডেট: ১১০৫
এসবি/আরএ/এএটি