ঢাকা: আজ আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস। এ দিবসে দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চারিত হবে শপথ।
তার কর্মজীবন নিয়ে দুই পৃষ্ঠার বিশেষ নিবন্ধে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তার অসাধারণ সাহসিকতাপূর্ণ অভিযান, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, জরিমানা ও রাজস্ব আদায়ে বিপ্লব ঘটানো এবং সরকারি সেবার মানোন্নয়নে অতুলনীয় সাফল্য প্রদর্শনের জন্য মুনীর চৌধুরীকে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের রাষ্ট্রীয় কর্মচারী-কর্মকর্তাদের জন্য ‘অনুকরণীয় আলোকবর্তিকা’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, দিনের পর দিন মুনীর চৌধুরীর মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে বহু অসাধ্য সাধন করেছেন। একের পর এক তার অভিযানে পরিবেশ দূষণ, খাদ্য নিরাপত্তা, বন্দর ও নৌ পরিবহন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও সেবাখাত, ভূমি ব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি দমন ইত্যাদি বহু সেক্টরকে শুদ্ধি অভিযানে প্রকম্পিত করে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। চাকরিকালে বহু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে তিনি দুর্বৃত্তায়ন থেকে মুক্ত করে অনন্য সাধারণ উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তাকে এই নিবন্ধে একজন ‘খাঁটি মানুষ, সংস্কারক, যোদ্ধা, জনপ্রশাসনে দার্শনিক এবং অনন্য সাধারণ গুণে গুণান্বিত পথপ্রদর্শক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ডুবে যাওয়া ও ক্ষয়ে যাওয়া বহু প্রতিষ্ঠানকে তিনি অসাধারণ নেতৃত্ব গুণে জীবন্ত ও সমৃদ্ধ করেছেন। চাকরি জীবনে কখনও কোন চাপ, হুমকি কিংবা রক্তচক্ষুকে তিনি পরোয়া করেননি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তার পলিসির কারণে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটা, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, পরিবেশ অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং জাতীয় বিজ্ঞান জাদুঘর কর্তৃপক্ষসহ আরও বহু প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মধ্যে কর্মমুখী সংস্কৃতি, কর্তব্যপরায়ণতা, সময়ানুবর্তিতা, শৃংখলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাত্রা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
প্রতিবেদনে মুনীর চৌধুরীকে একজন ‘খাঁটি দেশপ্রেমিক এবং অত্যন্ত পেশাদার চৌকষ’ আমলা হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়, দুর্নীতি ও অপরাধ দমনে তার প্রচণ্ড সাহসের কারণে বাংলাদেশে দুর্নীতিবাজরা এখনও তাকে ‘ভয়’ করে চলে। কিন্তু তার অসাধারণ সততা, জনসেবামুখিতা এবং অতি সাধারণ জীবনযাপনের কারণে দেশজুড়ে তার ভীষণ জনপ্রিয়তা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বিজ্ঞান জাদুঘরের আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের নায়ক হিসেবে তাকে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে, আগের বিজ্ঞান জাদুঘর ও বর্তমান বিজ্ঞান জাদুঘরের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য তৈরি রয়েছে। এজন্য মুনীর চৌধুরীর নেতৃত্বকে প্রশংসিত করে বলা হয়েছে, সারা জীবনে দুর্নীতি ও অপরাধ দমনের অসীম সাহসী যোদ্ধা এখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সরকারের ডিজিটাল বিপ্লবের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চাকরি জীবনে সরকারি বাজেট বা বরাদ্দের প্রতিটি টাকা অসাধারণ স্বচ্ছতা ও মিতব্যয়িতার সঙ্গে তিনি ব্যয় করেন।
প্রাপ্যতা সত্ত্বেও সরকারের তহবিলে গাড়ি ব্যবহারসহ নানা খাতে তিনি অর্থ জমা করেন, অর্থ সাশ্রয়ের জন্য বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করেন, কঠোর অনুশাসন মেনে রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেন এভাবে মুনীর চৌধুরী তার অধীনস্তদের কাছে শ্রদ্ধার পাত্রে পরিণত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জনপ্রিয় সরকারি এ কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনে ক্ষিপ্র গতিতে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালিয়েছেন, এর প্রভাব পড়ে বিভিন্ন সেক্টরে। কিন্তু প্রচণ্ড চাপের মুখে তাকে বদলি করে বিজ্ঞান জাদুঘরে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, মারিয়া আন্দোলিসা, প্রধান সম্পাদক ‘দ্য ওয়েলিংটন’ ম্যাগাজিন নামক দক্ষিণ এশিয়ার এ বিশেষ সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়ে নভেম্বরের শেষে বাংলাদেশে পৌঁছে। অকল্যান্ড নিউজিল্যান্ড থেকে প্রকাশিত বিশেষ এ সংখ্যায় দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের আরো কয়েকজন ব্যক্তিত্বের কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে, যারা নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন মালালা ইউসুফজাই, ভারতের কৈলাস সত্যার্থী, পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে।
নির্লোভ, নিঃস্বার্থ, নিবেদিত প্রাণ দুর্নীতি বিরোধী যোদ্ধা মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর সততার দৃষ্টান্ত হোক সবার জন্য আজকের দিনে অনন্ত অনুপ্রেরণা।
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
এসএমএকে/এএটি