ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড গফ হুইটলাম মানুষের মঙ্গলে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তারা দুজনেই ছিলেন দূরদর্শী নেতা।
অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। সমসাময়িক দুজন কিংবদন্তি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জীবন, কর্ম ও রাজনৈতিক আদর্শের ওপর এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানায়।
ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হুইটলাম ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরা ও কনস্যুলেট জেনারেল সিডনি যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। হুইটলাম ইনস্টিটিউটে মাসব্যাপী গফ হুইটলাম এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছে, যা জানুয়ারি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর পিটার শেরগোল্ডের সভাপতিত্বে সেমিনারে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যারেথ ইভানস স্বাগত বক্তব্য দেন। এছাড়া ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর বার্নে গ্লোভার মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ এবং এ ক্ষেত্রে তার পররাষ্ট্রনীতির অবদানের কথা উল্লেখ করেন ড. মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবিকতা, বন্ধুত্ব এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বিষয়ক বঙ্গবন্ধু যে বার্তা দিয়ে গেছেন, তার মাধ্যমে সমসাময়িক বিশ্বের অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পালন এবং দুই নেতার জীবন ও কর্ম উদযাপনের মাধ্যমে উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি দুই দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যারেথ ইভানস বলেন, বঙ্গবন্ধু ও হুইটলামের পারস্পরিক যোগাযোগ এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংসদীয় গণতন্ত্র দুই দেশের দ্ধিপাক্ষিক সম্পর্কের শক্তিশালী ভিত্তি। এ দুই নেতার চিন্তাচেতনাকে ও প্রতিশ্রুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে ভবিষ্যতে উভয় দেশ উন্নয়ন ও বাণিজ্যের ঊর্ধ্বে নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক বিষয়েও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এবং অস্ট্রেলিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার জেনি হকিং মূল বক্তা হিসেবে সেমিনারে বক্তব্য দেন। ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ ও সমসাময়িক বিশ্ব এবং অধ্যাপক জেনি হকিং উন্নয়নশীল বিশ্বের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক স্থাপনে হুইটলামের অবদানের ওপর আলোচনা করেন।
বঙ্গবন্ধু ও হুইটলামের স্বপ্ন ও দূরদর্শিতা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিবিধ সংস্কার ও অবদানের কথা উল্লেখ করেন হাইকমিশনার সুফিউর রহমান। তিনি দুই দেশের মহান দুই নেতার বিষয়ে অধিক অধ্যয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সিডনিতে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মাসুদুল আলম।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
টিআর/এমজেএফ