ঢাকা: বিশ্বজুড়ে বেড়েই চলেছে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য। মাত্র ১০ শতাংশ ধনীর কাছে রয়েছে বিশ্বের মোট সম্পদের ৭৬ শতাংশ।
প্রতিবেদন বলছে, মহামারি কারোনাকালে বিশ্বের অতি ধনীদের সম্পদ বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণে। করোনা মহামারি বিপর্যস্ত করে তুলেছে বিশ্ব অর্থনীতিকে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছেন অনেকে। প্রায় দুই বছর ধরে চলা মহামারিতে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে এসেছে অন্তত ১৫ কোটি মানুষ।
তবে এর বিপরীত চিত্রও রয়েছে। মহামারি শুরুর পর বিশ্বের ধনীদের সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে। ২০২০ সালে বিশ্ব ধনকুবেরদের পারিবারিক সম্পদের পরিমাণ বেড়ে বৈশ্বিক সম্পদের ৩ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বছরের শুরুতে যা ছিল ২ শতাংশ।
এমন তথ্য তুলে ধরে বিশ্ব বৈষম্য প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের মোট সম্পদের ৭৬ শতাংশ রয়েছে ১০ শতাংশ ধনীর কাছে। অন্যদিকে ৫০ শতাংশ অতি দরিদ্রের সম্পদের পরিমাণ মাত্র ২ শতাংশ।
একই সময়ে বেড়েছে আয় বৈষম্যও। বর্তমানে বৈশ্বিক আয়ের ৫২ শতাংশই বিশ্বের ১০ শতাংশ ধনীর। বিশ্বের ৫০ শতাংশ অতি দরিদ্রের আয় ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
বিশ্লেকরা বলছেন, মহামারির কারণে অনলাইন ব্যবস্থার সুবিধা পেয়েছেন বিশ্বের ধনকুবেররা। বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দাম বেড়ে তাদের সম্পদের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
শুধু ধনী দরিদ্রের বৈষম্যই নয়, এ সময় বেড়েছে লিঙ্গ বৈষম্য। বর্তমানে বিশ্বের শ্রম বাজার থেকে নারী শ্রমিকদের আয় ৩৪ দশমিক ৭ শতাংশ। ১৯৯০ সালে বিশ্বের নারী শ্রমিকদের আয় ছিল ৩০ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থাৎ ৩০ বছরেও নারী শ্রমিকদের আয় বৈষম্যের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়নি।
বিশ্বের ৩০টি দেশের অসমতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এবারের প্রতিবেদনে। যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের দেশ হিসেবে উঠে এসেছে ভারতের নাম। দেশটির ১ শতাংশ মানুষের হাতে মোট সম্পদের ২২ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। আর ১০ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে ৫৭ শতাংশ সম্পদ।
বিশ্ব বৈষম্য প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের ধনী দেশগুলো মহামারির কারণে জনগণের আয় হ্রাস কমাতে বড় অংকের প্রণোদনা দিয়েছে। কিন্তু দরিদ্র আর উন্নয়নশীল দেশগুলো তেমন উল্লেখযোগ্য সহায়তা না দেওয়ায় দারিদ্র্য আরও বেড়েছ। আবার অনেক দেশেই প্রণোদনার আসল সুবিধাভোগী হয়েছেন ধনী ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২১
এসই/এমজেএফ