নড়াইল: ১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মিত্র বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়াই নড়াইলের মুক্তিবাহিনী এবং মুক্তিপাগল দামাল ছেলেরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করে নড়াইলকে মুক্ত করেন।
কালিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মো. নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ৮ ডিসেম্বর লোহাগড়া থানা এবং ৯ ডিসেম্বর কালিয়া থানা শক্রমুক্ত হয়। এরপর নড়াইল সদর, লোহাগড়া ও কালিয়ার খড়রিয়া মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধারা সম্মিলিতভাবে ৯ ডিসেম্বর রাতে রূপগঞ্জ ওয়াপদায় অবস্থিত পাকিস্তানি ও রাজাকার বাহিনীর সবচেয়ে বড় ক্যাম্পের দক্ষিণ, পূর্ব ও উত্তর দিক থেকে ঘেরাও করে ফেলেন।
ভোর ৪টা থেকে রূপগঞ্জ জামে মসজিদ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমির হোসেন ও সাখাওয়াত হোসেন রানার নেতৃত্বে বর্তমান উৎসব কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাঈদুর রহমান সেলিম, ব্যবসায়ী মালেক মোল্লার দোতলায় সদর উপজেলা মুজিব বাহিনীর কমান্ডার শরীফ হুমায়ুন কবির, সাইফুর রহমান হিলু প্রমুখের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শক্রপক্ষের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন। পরে মুক্তিযোদ্ধরা আক্রমণের গতি বাড়িয়ে দেন। ১০ ডিসেম্বর সকাল ১১টার দিকে পাকিস্তানি মিলিশিয়া বাহিনীর অধিনায়ক বেলুচ কালা খান ২২ পাকিস্তানি সেনা, ৪৫ জন রাজাকার ও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রসহ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্যে দিয়ে শত্রুমুক্ত হয় নড়াইল।
দিবসটি পালনের জন্য নড়াইলের জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিট, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, চিত্রা থিয়েটারসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী পৃথক পৃথক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পুরাতন বাস টার্মিনালে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ, ৭১ এর বধ্যভূমি ও গণকবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, মুক্তিযোদ্ধাদের র্যালি, দোয়া অনুষ্ঠান ও বিজয় উৎসবের ভিডিও প্রদর্শন।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে নড়াইলের ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা খেতাব প্রাপ্ত হন। তারা হলেন- বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ, বীর উত্তম মুজিবুর রহমান, বীর বিক্রম আফজাল হোসেন, বীর প্রতীক খোরশেদ আলম ও বীর প্রতীক মতিয়ার রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২১
কেএআর