ঢাকা: তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সদ্য পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ হাসান কানাডা গেছেন। পদত্যাগের পর মাত্র দুইদিনের মধ্যে তিনি এত দ্রুত কীভাবে কানাডা গেলেন, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
ডা. মুরাদ হাসান ৭ ডিসেম্বর প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। আর ৯ ডিসেম্বর রাতে কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন৷ এত দ্রুত কীভাবে তিনি কানাডার ভিসা পেলেন? তার কাছে কি আগেই কানাডার ভিসা ছিল? কোন পাসপোর্ট নিয়ে তিনি কানাডা গেলেন? এমন নানা প্রশ্ন উঠেছে।
ডা. মুরাদ হাসান প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে চলতি বছর সেপ্টেম্বরে কানাডা সফর করেন। সেই সময় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ আটদিন কানাডায় ছিলেন। কানাডায় তিনি তখন মন্ট্রিল, অটোয়া, টরন্টো, কুইবেক, ভ্যাংকুভারসহ বেশ কয়েকটি শহরে যান। বিভিন্ন শহরে বেশ কয়েকটি সেমিনারেও অংশ নেন তিনি। কানাডা থেকে দেশে ফিরে অক্টোবর মাসে আবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান তিনি।
সূত্র জানায়, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদে থাকায় ডা. মুরাদ লাল পাসপোর্ট বহন করতেন। এখন প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেও তিনি সংসদ সদস্য পদে বহাল রয়েছেন। সে কারণে তিনি এখনো লাল পাসপোর্ট ব্যবহার করতে পারেন।
বিদেশে সরকারি সফরে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা লাল পাসপোর্ট ব্যবহার করলেও, সেজন্য জিও (সরকারি আদেশ) প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর সংসদ সদস্যদের লাল পাসপোর্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ অধিবেশন চলাকালে সংসদের অনুমতির প্রয়োজন হয়ে থাকে। এখন যেহেতু সংসদ অধিবেশন চলছে না, সে কারণে সংসদ সদস্য হিসেবেও লাল পাসপোর্ট নিয়ে ডা. মুরাদ হাসান দেশ ত্যাগ করতে পারেন।
ডা. মুরাদের এত দ্রুত দেশ ত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক শওকত আলী সাগর। বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, 'আচ্ছা, ডা. মুরাদ চাইলেন আর অমনি টিকিট কেটে কানাডার উদ্দেশে প্লেনে চড়ে বসলেন! বিষয়টা এতো সহজ হলো কেমনে? বাংলাদেশের কতোজন মন্ত্রী, এমপি, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী আগে থেকেই এ ধরনের ব্যবস্থা করে রেখেছেন? যারা বড় বড় কথা বলেন, তাদের সবারই কী এ রকমের আরেকটা জায়গা ঠিক করা আছে- যে চাইলেই লাফ দিয়ে সেখানে চলে যেতে পারবেন!
ডা. মুরাদ কয়েক মাস আগে কানাডা এসেছিলেন, তখন তিনি প্রতিমন্ত্রী। সেই সময় তিনি সরকারি পাসপোর্টে ভ্রমণ করেছেন। তার ব্যক্তিগত পাসপোর্টেও কী কানাডার ভিসা আগে থেকেই ছিল? তিনি কী দুটি পাসপোর্টই ব্যবহার করতেন! সেটি কী তিনি পারেন? তা না হলে হুট করেই তিনি কানাডার ভিসা পেয়ে গেলেন কীভাবে?'
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আগেই জানিয়েছিলেন, ডা. মুরাদ বিদেশে থাকবেন নাকি, দেশে থাকবেন, সেটা তার ব্যাপার। বিদেশে যেতে তার বাঁধা নেই।
নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও কয়েকটি অডিও ক্লিপ ফাঁসের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ডা. মুরাদ হাসান প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২১
টি আর/এসআই