ঢাকা: নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে উসকানি ও রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার করার অভিযোগ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর স্বামীবাগের মিতালী স্কুল গলি রোড এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা, ল্যাপটপ, পোর্টেবল হার্ডডিস্ক ও বিভিন্ন দেশবিরোধী, নাশকতা ও উসকানিমূলক লিফলেট উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানায়, গ্রেফতাররা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ লিফলেট বিতরণের মধ্যদিয়ে দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে অপপ্রচার চালাত। এসব উসকানি ও অপপ্রচারের জন্য তাদের টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন ক্লোজ গ্রুপ রয়েছে। যার মাধ্যমে নাশকতা ও জ্বালাও-পোড়াওয়ে উসকানি দিত। এদের একজন ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে র্যাব সাইবার মনিটরিং সেলের নিয়মিত সাইবার পেট্রোলিংয়ে দেখা যায়, একটি চক্র অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়—এমন সংবেদনশীল বিষয়ে মিথ্যা এবং অতিরঞ্জিত তথ্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাষ্ট্রবিরোধী এমন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব সাইবার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারদের কাছ থেকে উদ্ধার আলামত বিশ্লেষণ এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, তারা রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্ন করতে সরকারের বিরুদ্ধে নানা প্রকার অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করে। অনলাইনে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত ছিল। বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের বাইরে মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করে।
বিগত সময়ের বিভিন্ন ইস্যুসহ সাম্প্রতিক সময়ে ‘নিরাপদ সড়ক’ আন্দোলনকে পুঁজি করে তারা নাশকতার অপচেষ্টা করে।
গ্রেফতার সবাই দীর্ঘদিন রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত উল্লেখ করে খন্দকার আল মঈন বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে তারা সংঘবদ্ধভাবে ক্লোজড গ্রুপের মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপের মাধ্যমে তারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করত।
এ ধরনের বিভিন্ন কন্টেন্ট তাদের ল্যাপটপে পাওয়া গেছে। বিভিন্ন অডিও-ভিডিও কন্টেন্ট এডিট করে তৈরি ও প্রচার করে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। তারা রাষ্ট্রবিরোধী সাইবার ফোর্স পরিধি বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ব্যানারে রিক্রুটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
গ্রেফতার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও তাওহীদুল ইসলামের নামে বিভিন্ন থানায় রাষ্ট্রবিরোধী, নাশকতা, সন্ত্রাসবিরোধী এবং বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার ও নাশকতা ও উসকানিমূলক প্রচারণার কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতাররা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় পাস করেছেন। তারা নিয়মিত জায়গা পরিবর্তন করতেন। তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অনেকেই অর্থ জোগান দিত। আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ স্বীকার করেছেন, তিনি আগে ছাত্রশিবির করতেন। বাকিরা রাজনৈতিক মতাদর্শের কথা স্বীকার করেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২১
পিএম/জেএইচটি