হবিগঞ্জ: কারো অপমৃত্যুর খবর পেলেই ছুটে যান ঘটনাস্থলে, লাশের সঙ্গে মর্গ পর্যন্ত। রাতভর পাহারা দিয়েছেন মর্গে পড়ে থাকা অর্ধশত নিথর দেহ।
তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য। সমাজ উন্নয়নে অসামান্য ভূমিকা রাখায় এবার তিনি জয়িতার সম্মাননা পেয়েছেন।
১৮ বছর ধরে সমাজ উন্নয়নে দায়িত্ব পালনকারী ওই নারী জনপ্রতিনিধির অবদানের কথা জানতো শুধু এলাকার মানুষ। সম্প্রতি এ নিয়ে বাংলানিউজকে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি নজরে আসে সবার। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবসের অনুষ্ঠানে তার হাতে জয়িতার সম্মাননা স্মারক তুলে দেয় জেলা প্রশাসন।
সামছুন্নাহারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নারী নির্যাতন শব্দটির সঙ্গে তার পরিচয় শৈশব থেকে। নিকটাত্মীয় এক নারীকে বিভীষিকাময় নির্যাতনের শিকার হতে দেখেছেন সামনে থেকে। এরপর থেকেই তিনি নির্যাতনের শিকার নারীদের পাশে থাকতে শুরু করেন। ঝগড়া ও গ্রাম্য দাঙ্গার খবর পেলেই ছুটে যান ঘটনাস্থলে, দুইপক্ষকে শান্ত করতে পারলেই যেন শান্তি পান তিনি।
তিনি আরও জানান, ১৮ বছর ধরে ইউপি সদস্যের দায়িত্বে। এর মধ্যে অন্তত অর্ধশত ঝুলন্ত ও বিষাক্রান্ত মরদেহ নিজের হাতে মর্গে নিয়ে গেছেন। রাতভর মর্গের সামনে থেকেই মরদেহগুলো পাহারা দিয়েছেন। অপমৃত্যুর খবর পেলে তিনি ঘরে থাকতে পারেন না, ছুটে যান ঘটনাস্থলে।
জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম বলেন, সমাজ উন্নয়নে অনন্য নারীদের একজন মোছা. সামছুন্নাহার বেগম। যিনি নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ‘মনোবল অটুট রেখে’ কাজ করছেন পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য ও তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে। এবারের নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
** বৈষম্যের বাধা পেরিয়ে সামছুন্নাহার এখন অনুপ্রেরণার নাম
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২১
আরএ