ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে সরকার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে সরকার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে র‍্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এটা অনভিপ্রেত, দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে সরকারের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে জানান এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি এ ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই থাক। আমাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে সম্পর্ক যেটির ওপর এ ঘটনার প্রেক্ষিতে কোনো প্রভাব পড়বে না।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে ক্লিনিক ভবনে তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে মুজিবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে তথ্য অধিদফতরের বিশেষ প্রকাশনা 'মা ও শিশু' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।

প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য সচিব মো. মকবুল হোসেন।

যুক্তরাষ্ট্রে র‍্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী এবং নানাভাবে আমাদের জাতির অগ্রগতিতে সহযোগিতা করে আসছে। সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গি দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের টেকটিক্যাল সহযোগিতা রয়েছে। তাদের সেই সহযোগিতা নিয়েই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো উপকৃত হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র। কারণ কোনো ধরনের যোগাযোগ ছাড়া হঠাৎ করে এভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করি।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের কিছু এনজিও, কিছু ব্যক্তিবিশেষ ক্রমাগতভাবে বিভিন্ন জায়গায় দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারা বিভিন্ন দেশে অন্যান্য দেশে ভুলভাবে তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করেন। ফেব্রিকেটেড, মিসলিডেড তথ্য উপাত্তের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মনে করি।

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো ক্রমাগতভাবে বছরের পর বছর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। তাদের হেফাজতে যে মৃত্যু হয় সেগুলো নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা রয়েছে। গুয়ানতানামো বে-তে বন্দীদের ওপর নির্যাতন করা হয় সেগুলো নিয়ে বহু প্রতিবেদন বিশ্বব্যাপী প্রকাশিত হয়েছে, সেটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবাদ হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সময় অভিভাসীরা যখন সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করেছে তখন মা-বাবার কাছ থেকে যেভাবে শিশুদের আলাদা করে রাখা হয়েছে, সেটি অন্য কোনো দেশে হয়েছে বলে আমার জানা নেই।

তিনি বলেন, ফ্রয়েডকে দিনের বেলা গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে হত্যা করা হয়েছে। এমন ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেনি। আমাদের দেশে জঙ্গি দমনের সময় এনকাউন্টারে অনেক জঙ্গি মারা যায়। বোস্টনে যখন বোমা হামলা হয় এরপর তাদেরকেও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে মার্কিন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোনো বড় দেশ ভবিষ্যতে সেসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞ দেয় কিনা সেটি দেখার বিষয়।

সামনেই দেশে জাতীয় নির্বাচনে এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের আচরণ সরকারের ওপর কোনো চাপ পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবে জনগণ। কোন দেশ কার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল সেটি জনগণের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু ইসরাইলের কোনো কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে দেখিনি। যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক, ব্যবসায়ীক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে সেসব দেশের কারো ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে দেখিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
জিসিজি/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।