ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রমত্তা ব্রহ্মপুত্র এখন ধু ধু বালুচর

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
প্রমত্তা ব্রহ্মপুত্র এখন ধু ধু বালুচর ব্রহ্মপুত্র নদের বুক জুড়ে এখন শুধু ধু ধু বালুচর-বাংলানিউজ

কুড়িগ্রাম: বর্ষা মৌসুমে কুল ছাপিয়ে লোকালয় প্লাবিত করা প্রমত্তা ব্রহ্মপুত্র নদের বুক জুড়ে এখন শুধুই ধু ধু বালুচর। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষজন কখনও নৌকায় চেপে, আবার কখনও হাঁটু পানি ভেঙে দুর্ভোগকে সঙ্গী করে চলাচল করছেন।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের সীমান্ত গলিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। কুড়িগ্রামে এ নদের দৈর্ঘ্য ৪০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ৯ থেকে ১২ কিলোমিটার।

ব্রহ্মপুত্র নদে কিছুটা পানি থাকলেও তা নদের বুকে জেগে ওঠা অসংখ্যা ছোট-বড় চরের ভিতর দিয়ে ক্ষীণ ধারায় একাধিক চ্যানেলে প্রবাহিত হচ্ছে। ভরা বর্ষায় খরস্রোত থাকলেও, এখন পানির তেমন স্রোত নেই বললেই চলে।

এদিকে নদে পানি প্রবাহ কম থাকায় চরাঞ্চলে মানুষ পারাপার বা মালামাল আনা-নেওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চরাঞ্চলের অনেক জায়গায় পানি প্রবাহ ক্ষীণ থাকায় নৌকা চলচল ব্যহত হচ্ছে।

সরেজমিনে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে দেখা যায় স্বাভাবিক সড়ক বা নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় নানা দুর্ভোগ পোহানোসহ দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন এলাকাবাসী। এসব চরের মানুষজনকে কয়েক কিলোমিটার বালু বেষ্টিত পথ হেঁটে নিজ নিজ নৌকা ঘাটে আসতে হচ্ছে। কখনও হাটু পানি ভেঙে হেঁটে, আবার কখনও নৌকায় চেপে ছোট ছোট চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বাজার-সওদা করাসহ চরে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে আসাযাওয়া করতে হচ্ছে হাট-বাজারে।

হাতিয়া ইউনিয়নের দাগারকুটি চরের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বানের সময় সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়, আর শুকানের সময় মাইলের পর মাইল বালুচর। আমদের ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন চরের গরম বালুতে হেঁটে যাওয়া আসা করতে হয়। নৌকার ঘাট পর্যন্ত চরের কোন কোন স্থানে হাঁটু পানি হেঁটে পার হই।

গুজিমারী চরের আমেনা বেওয়া বাংলানিউজকে জানান, এখন নদীতে পানি নেই, চারিদিকে বালু আর বালু। বানের সময় নদীতে পানি বেশি থাকায় নৌকায় যাওয়া-আসা করা যায়। তখন কষ্ট কম হয়, এখন বালুর মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে জান শেষ।

উলিপুরের হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মাষ্টার বাংলানিউজকে জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কমে যাওয়ায় জেগে উঠেছে অসংখ্য বালুচর। চরের মানুকে বালু বেষ্টিত দীর্ঘপথ হেঁটেই হাট-বাজার করতে বা কোনো পণ্য বিক্রি করতে নিজ নিজ নৌকা ঘাটে আসা যাওয়া করতে হয়। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া বা অসুস্থ মুমূর্ষ রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিতে দুর্ভোগকে সঙ্গী করে যেতে হয় হাসপাতালে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
এফইএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।