মানিকগঞ্জ: ১৯৭১ সালের ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী ৪২টি ছোট বড় যুদ্ধের মাধ্যমে ১৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ হানাদার বাহিনীর দখল মুক্ত হয়। দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে মানিকগঞ্জে শহীদ হন ৫৮ জন মুক্তিযোদ্ধা।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাক সেনা বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর মানিকগঞ্জের তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল হক চাঁন মিয়া সাত সদস্য বিশিষ্ট বিপ্লবী পরিষদ গঠন করেন।
বিপ্লবী পরিষদের সদস্যরা হলেন মোসলেম উদ্দিন খান হাবু মিয়া, ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল হালিম চৌধুরী, খন্দকার দোলোয়ার হোসেন, সৈয়দ আনোয়ার আলী চৌধুরী, মীর আবুল খায়ের ঘটু ও মফিজুল ইসলাম খান কামাল পরবর্তীতে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধ পরিচালনা করেন তারা।
মুক্তিযুদ্ধ ২৫ মার্চ মুক্তি বাহিনীরা আরিচা ফেরি ঘাট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হেলিকপ্টারে করে বিপুল সংখ্যক পাক বাহিনী মানিকগঞ্জে প্রবেশ করে। প্রবেশের পর দেশীয় দোসরদের সহায়তায় তারা গ্রামে গ্রামে ডুকতে শুরু করে। ২২ জুন ভোরে ঘিওর থানায় পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর ক্যাম্পে হামলা করেন মুক্তিযুদ্ধারা। পরে ১৩ অক্টোবর সিও অফিসে সংরক্ষিত পাক বাহিনী ক্যাম্প দখলের জন্য মুক্তি বাহিনী আক্রমণ করলে পাকবাহিনী পরাজিত হয় এবং সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের আসে। ২৯ অক্টোবর সিংগাইরে গোলাইডাঙ্গা শতাধিক পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ৮৩ জন পাক সেনা মারা যায় এছাড়া মানিকগঞ্জে আরও বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়েছিল।
১৩ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে সমবেত হন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল হক চাঁন মিয়ার সভাপতিত্বে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়।
মানিকগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ইঞ্জিনিয়ার তোবারক হোসেন লুডু বলেন, মানিকগঞ্জে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৫৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছে পঙ্গু হন ৯ জন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখায় ৪ জনকে খেতাব দেওয়া হয়। খেতাবপ্রাপ্তরা হলেন স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) বদরুল আলম (বীর প্রতীক), ইব্রাহীম খান (বীর প্রতীক), শহীদ মাহফুজুর রহমান (বীর প্রতীক) এবং মোহাম্মদ আতাহার আলী খান (বীর প্রতীক)।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
কেএআর