ফরিদপুর: একটি ব্রিজের অভাবে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর দুই ইউনিয়নের নয় গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। কোনো মতে বাঁশের সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন তারা।
স্থানীয়রা জানায়, বোয়ালমারী উপজেলার গুণবহা ইউনিয়নের জালিয়াডাঙ্গা গ্রামে বারাসিয়া নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সেতুটি দিয়ে উপজেলার চতুল ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর, শুকদেবনগর, রামদেবনগর, আরাজী বাইখীর এবং গুণবহা ইউনিয়নের জালিয়াডাঙ্গা, ধোপাপাড়া, দরিহরিহরনগর, চাপলডাঙা, গুনবহা গুচ্ছগ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে।
সেতুটির পূর্ব পাশে চতুল ইউনিয়নের অন্তত চার গ্রামের মানুষ নিত্যদিন ব্যবসা বাণিজ্য, আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যাওয়া এবং লেখাপড়ার উদ্দেশে শিক্ষার্থীদের ওই সাঁকো ব্যবহার করে নদীর অপর প্রান্তে যেতে হয়। পশ্চিম দিকে গুণবহা ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের মানুষকে কেনাকাটাসহ নানা কাজে এবং শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার উদ্দেশে যাতায়াত করতে হয় নদীর অপরদিকের গ্রামগুলোতে।
নদীর এক প্রান্তে অবস্থিত শুকদেবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং অপর প্রান্তে অবস্থিত শিরগ্রাম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। ফলে নদীর উভয় প্রান্তের শিশু শিক্ষার্থীদেরই ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে অপর প্রান্তে অবস্থিত স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার সময় অভিভাবকরা থাকেন উদ্বিগ্ন। প্রয়োজনের তাগিদে স্থানীয়রাই প্রতিবছর বাঁশ ও খুঁটি দিয়ে সেতু তৈরি করে কোনো রকমে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। বছরের পর বছর মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও আজও সুনজর পড়েনি কর্তৃপক্ষের।
ফলে নদীর দুই প্রান্তের মানুষের সেতুবন্ধন অধরাই রয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট ওই গ্রামগুলোর অধিবাসীদের দাবি উপজেলার গুণবহা ইউনিয়নের জালিয়াডাঙ্গা ফুলতলা ঈদগাহ এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণের। ব্রিজটি নির্মিত হলে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়িত হয়। এতে করে গুণবহা ইউনিয়নের লোকেরা সহজে চতুল ইউনিয়নে এবং চতুল ইউনিয়নের লোকেরা গুণবহা ইউনিয়নে যাতায়াত করতে পারবে।
জালিয়াডাঙ্গা গ্রামের ব্যবসায়ী শিহাব মোল্যা বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর নিজেদের খরচে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি থইথই করে। তখন নড়বড়ে সাঁকো পার হতে ভয় লাগে।
তিনি আরো জানান, গুনবহা ইউনিয়নের জালিয়াডাঙ্গা ফুলতলা ঈদগাহ নামক স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে উপজেলার নয় গ্রামের মানুষ উপকৃত হতো।
গুনবহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আ. আলীম মোল্যা বাংলানিউজকে জানান, বাঁশের সেতুটি এখন দুর্বল কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে আছে। অতি প্রয়োজনের সময় ঝুঁকি নিয়েই পার হতে হয় সেতুটি। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
সচিবালয়ের সাবেক কর্মকর্তা শুকদেবনগর নিবাসী সাইফুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে জানান, অনেক আগে থেকেই একটি ব্রিজের জন্য আমরা অনেক দৌঁড়াদৌঁড়ি করছি। কিন্তু আশার আলো দেখছি না।
এ ব্যাপারে চতুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ মো. সেলিমুজ্জামান লিটু জানান, সেতুটি নির্মিত হলে দুই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এর সুফল ভোগ করবে। শিগগিরই সেতুটি নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
এনটি