মানিকগঞ্জ: বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে, ঠিক তখনি এ উদ্যোগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভূমি অফিসের নাজির সাইফুল ইসলাম প্রতি নামজারি থেকে অতিরিক্ত সাড়ে ৩ হাজার টাকা নিচ্ছেন, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা, গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।
নাজির সাইফুল ইসলাম এর আগে সিংগাইর উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত ছিলেন।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা ভূমি অফিসে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হয় জমির নামজারির জন্য। আর এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি ক্রমিক নম্বর পরে প্রতি আবেদনের কিন্তু আবেদনের এ ভুল ওই ভুল বলে আবেদনের সিরিয়াল ভঙ্গ করে অতিরিক্ত সাড়ে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে পরেরটা আগে এবং আগেরটা পরে অনুমোদন দেওয়া হয়।
নাজির সাইফুল ইসলামের এই অপকর্মের বিষয়টি একাধিকবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করলেও কোনো সুরাহা হয়নি বরং তিনি (সহকারী কমিশনার ভূমি) নাজির সাইফুলের একই সুরে কথা বলেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। কারণ হিসেবে তারা অভিযোগে বলেছেন নাজিরের মাধ্যমে এসিল্যান্ড সব লেনদেনের কার্য সম্পাদন করে থাকে।
ডিসি বরাবর যে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তার অনুলিপি: প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় কমিশনার ঢাকা বিভাগ বরাবর দেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলা ভূমি অফিসে নাম প্রকাশ না মর্মে নামজারি করতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, নামজারির করতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়েছি কিন্তু তার পরও নাজির সাইফুল ইসলাম আমার কাছে সাড়ে তিন হাজার টাকা অতিরিক্ত দাবি করেছেন। বাধ্য হয়েই তার দাবি অনুযায়ী সেই টাকা দিয়েছি, তা না হলে আবার কোনো না কোনো ভোগান্তিতে ফেলবে নাজির সাহেব।
সদর ভূমি অফিসের এক কর্মচারী বলেন, এই অফিসে যা কিছু হয় সব কিছু নাজির সাইফুল ইসলামের ইশারায়। সাইফুল ইসলাম কোনো না কোনোভাবে এসিল্যান্ডকে মেনেজ করে এই ধরনের অপর্কম করে বেড়াচ্ছে।
অভিযুক্ত নাজির সাইফুল বাংলানিউজকে বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে চাই না, যা বলার এসিল্যান্ড স্যার বলবেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসলীমা শিরিন মুক্তা বাংলানিউজকে বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ ডিসি বরাবর দিয়েছে বলে বিষয়টি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে।
কিন্তু তদন্ত চলমান অবস্থায় আপনি কি কোনো সংবাদ পরিবেশন করতে পারেন? বলেও পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসলীমা শিরিন মুক্তা।
ডিসি আব্দুল লতিফ বাংলানিউজকে বলেন, আমার কাছে সদর ভূমি অফিসের নাজিরের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ আসছে। অভিযোগটির ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে এবং তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদন জমা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২১
এসআরএস