ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নারীকণ্ঠে প্রবাসীদের টার্গেট করে প্রতারণা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
নারীকণ্ঠে প্রবাসীদের টার্গেট করে প্রতারণা

ঢাকা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমো অ্যাপসে নারীকণ্ঠ নকল করে প্রবাসে থাকা যুবকদের টার্গেট করতো চক্রটি। ইমোতে অনৈতিক কাজের প্রলোভন দেখিয়ে প্রবাসী যুবকদের ইমো আইডি হ্যাক করা হতো।

এরপর তাদের নানাভাবে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিতো।

বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানী, সাভারের আশুলিয়া ও নাটোর জেলা থেকে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেফতাররা হলেন—হুসাইন আলী (১৯), সুমন আলী (২৩), তরিকুল ইসলাম (২১), শান্ত আলী (১৯) ও সাদ্দাম হোসেন (১৯)।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নাটোর ও রাজশাহীকেন্দ্রিক কিছু কিশোর ও যুবক ইমো হ্যাকিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাদের কাছে এটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা প্রবাসী পুরুষদের ইমোতে অনৈতিক কাজের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর আমরা তাদের বিশাল একটা নেটওয়ার্কের সন্ধান পেয়েছি। চক্রে প্রায় দেড় শতাধিক সদস্য রয়েছেন, যারা এমন প্রতারণা করেছেন।

ডিআইজি কামরুল বলেন, তারা প্রথমে আইডি সার্চ দিয়ে প্রবাসীদের খুঁজে বের করে। এরপর নারী সেজে নানান গল্প-কথায় এগোতে থাকে। এক পর্যায়ে অনৈতিক কাজ করার প্রস্তাব দেয়। এ সময় প্রবাসী যুবক রাজী হলে জানায়, ঘণ্টায় কাজ করতে হলে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা দিতে হবে।

এরপর টাকা দিতে সম্মত হলে মোবাইলের পেছনের ক্যামেরায় অন্য কোনো কিশোরী বা নারীর ভিডিও চালু করে দিয়ে আড়ালে নারীকণ্ঠে ওই কিশোর-যুবকরা কথা বলতে থাকে। এতে প্রবাসী যুবকের কাছে আসল নারী মনে হতে থাকে। এভাবে নারী সেজে কথা বলে টাকা বাগিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি।

এক সময় প্রবাসীর ইমো আইডি হ্যাক করে ওটিপি কোড হাতিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে ইমো হ্যাক করে ইমো মালিকের কোনো অনৈতিক ছবি বা ভিডিও পেলে সেটি দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যম লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো তারা।

কামরুল আহসান বলেন, আমরা দেখেছি নাটোরের লালপুর এলাকায় এই ধরনের প্রতারকদের আধিপত্য বেশি। তাদের সঙ্গে আরও ১ থেকে দেড় শতাধিক সদস্য কাজ করছে। তারা সবাই একটি নেটওয়ার্কে কাজ করলেও চার-পাঁচজনের গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতারণার কাজ করে।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তেমন নেই। কিন্তু তারা সবাই একসঙ্গে কাজ করার কারণে একে অপর থেকে এসব প্রতারণার কৌশলগুলো সহজে রপ্ত করে নিচ্ছে। আমরা এই চক্রের বাকি সদস্যদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছি।

প্রতারক চক্রের টার্গেট কেন প্রবাসীরা—এমন এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, প্রবাসীরা দীর্ঘকাল পরিবারবঞ্চিত থাকেন। এ সময় মাঝে মাঝে বিনোদনের খোঁজে ইমোতে যান। আর সেখানেই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, ডিসেস্বর ২৩, ২০২১
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।