খুলনা: খুলনা পাটকল শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন।
উৎপাদন বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল চালু, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুটমিল, চট্টগ্রামের কেএফডি, আর আর এবং সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুটমিল ৫টি পাটকলের শ্রমিকদের ২০১৫ সালের ১ জুলাইয়ের প্রাপ্য বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মহানগরীর নতুন রাস্তা মোড়ে সড়ক অবরোধ করে তারা।
খালিশপুর-দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটির ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করে শ্রমিকরা।
রাজপথ অবরোধ ও সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কারখানা কমিটির সভাপতি ও সিবিএ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির হোসেন মনি এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির।
সড়ক অবরোধ ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মোফাজ্জেল হোসেন, পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের সদস্য সচিব এস এ রশীদ, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ খুলনা জেলা সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত নান্টু, শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য খুলনা জেলা সমন্বয়ক রুহুল আমিন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট খুলনা জেলা সভাপতি আবদুল করিম, প্লাটিনাম জুটমিলের সাবেক সিবিএ নেতা মো. খলিলুর রহমান, যশোর-খুলনা আঞ্চলিক বদলী কমিটির আহবায়ক মো. ইলিয়াস হোসেন, কারখানা কমিটির সহ-সভাপতি আবু বক্কার সিদ্দিক, ডালিম কাজী, উজ্জ্বল, সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম, কারখানা কমিটির কোষাধ্যক্ষ চাঁন মিয়া সর্দার, প্রচার সম্পাদক মো. শামীম, প্লাটিনাম জুটমিলের শ্রমিকনেতা মো. নূরুল ইসলাম, ক্রিসেন্ট জুটমিলের শ্রমিকনেতা মোশাররফ হোসেন, ছাত্র ফেডারেশন খুলনা মহানগর আহবায়ক আল আমিন শেখ।
বক্তারা বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে মহামারী করোনার সময়ে ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে হাজার-হাজার শ্রমিকসহ পাটসংশ্লিষ্ট ৩ কোটির বেশি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কর্মহীন শ্রমিকরা অর্থাহারে-অনাহারে থেকে অবর্ণনীয় মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
তারা আরও বলেন, দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে অধিকাংশ শ্রমিক সম্পূর্ণ মজুরি না পেয়ে স্ত্রী-সন্তানদের মুখে খাবার দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের চিকিৎসা করাতে পারছে না। এমতাবস্থায় ধারাবাহিকভাবে চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে শ্রমিক-কৃষকসহ সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না বর্তমান সরকার।
বক্তারা বলেন, পাটকলসহ জনগণের সব রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট হচ্ছে। দেশে চুরি-দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম হয়েছে। মন্ত্রী, সচিব, রাজনীতিবিদ ও বিজেএমসির কর্মকর্তা এই দুর্নীতির তালিকার বাইরে নয়। হাজার-হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। সরকার এদের পাকড়াও করতে পারছেন না। অথচ পাটকল শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনার জন্য রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করলে প্রশাসন দিয়ে হামলা-মামলা করা হচ্ছে। নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।
বক্তারা চাকরিহারা ও ক্ষতিগ্রস্ত ৫টি পাটকলের শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা মজুরী কমিশন, ২০১৫ অনুযায়ী প্রাপ্য বেতন, বকেয়া ৬টি বিলসহ অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধের দাবি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩ , ২০২১
এমআরএম/এনএইচআর