বগুড়ার দুপচাচিয়া উপজেলায় পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চামরুল ও গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দু'টি ওয়ার্ডে মেম্বার পদে ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পৃথক তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত ৫ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পুনঃরায় ভোট গণনার দাবিতে গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের শত শত নারী-পুরুষ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড বেলহালী গ্রামের সদস্য প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের (মোরগ) অভিযোগ, বুধবার বেলহালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গণনার সময় হঠাৎ গণনা কক্ষের বিদ্যুৎ বন্ধ করা হয়। পরে প্রতিপক্ষ প্রার্থী আদম রানাকে (ভ্যানগাড়ি) বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
তিনি গণনায় কারচুপির অভিযোগ এনে ফের ভোট গণনার দাবি জানালে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কেন্দ্রে কর্মরত প্রিজাইডিং অফিসার পুলিশের সহায়তায় কেন্দ্র ত্যাগ করে উপজেলার ফলাফল ঘোষণা কেন্দ্রে চলে আসেন।
এদিকে দেলোয়ার হোসেনের অনুসারী শত শত নারী-পুরুষ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই কেন্দ্রের সদস্য পদের ভোট পুনরায় গণনার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। তারা ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে পুনরায় ভোট গণনার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। পরে থানা অফিসার ইনচার্জ হাসান আলীর নেতৃত্বে এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। তাদেরকে আইনের মাধ্যমে ভোট গণনার ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিলে অবস্থানকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যায়।
অপরদিকে উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম আটগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৯ নং ওয়ার্ড ভালী কাথহালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দুই সাধারণ সদস্য প্রার্থী রিটার্নিং অফিসারের নিকট ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ দাখিল করেছেন। ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী মন্টু আলী প্রামানিক (ফুটবল) অভিযোগে উল্লেখ করেন, তাকে দুই ভোটের ব্যবধানে পরাজিত দেখিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শহিদুল ইসলাম (মোরগ) কে বিজয়ী দেখানো হয়েছে । সে পুনঃরায় ভোট গণনার দাবিও জানিয়েছেন। তবে নির্বাচিত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম জানান, ভোট একাধিকবার গণনা করেই ফল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিহিংসা বশত এই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে ।
৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ভালী কাথহালী গ্রামের জালাল উদ্দীন সরদার ইন্নাত (তালা) অভিযোগে উল্লেখ করেন, নির্বাচনে ভোট গণনা শেষে তাকে দুই ভোটের ব্যবধানে পরাজিত দেখিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া হোসেন (ভ্যানগাড়ি) কে নির্বাচিত দেখানো হয়। তিনি এর প্রতিবাদ করে পুনঃরায় ভোট গণনার দাবি করেন। কিন্তু দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার পুনঃরায় ভোট গণনায় অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।
এই কেন্দ্রের ব্যালট পেপার চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীর ব্যাপক গড়মিল রয়েছে উল্লেখ করে কারচুপির মাধ্যমে গণনা করে তাকে পরাজিত করার অভিযোগ করেন।
উপজেলা রিটার্নিং অফিসার ও সমাজসেবা কর্মকর্তা ফিরোজশাহ্ অভিযোগ দু'টি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে তাদের কিছুই করার এখতিয়ার নেই। অভিযোগপত্র দু'টি নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দিবেন। সেই সাথে অভিযোগকারীদের আদালতের মাধ্যমে পুনরায় ভোট গণনার ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২২
নিউজ ডেস্ক