ঢাকা: গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কয়েদিদের নিম্নমানের খাবার দেওয়া, ক্যান্টিনের খাবারের দাম বেশি রাখা এবং সঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা অনুসন্ধানে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সূত্র জানায়, একাধিক অভিযোগ অনুসন্ধানে প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক সালাম আলী মোল্লার নেতৃত্বে বুধবার (১২ জানুয়ারি) একটি অভিযান পরিচালনা করেছে এনফোর্সমেন্ট টিম।
দুদক টিম অভিযোগ যাচাই ও সত্য উদঘাটন করতে সরেজমিনে কাশিমপুর কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কারাগারে রান্নাঘর, ক্যান্টিন ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, এই খাবার সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহ করা হয়। এখানে শুধু রান্না করা হয়।
তবে খাবারের মান আগের তুলনায় সন্তোষজনক হলেও রান্নাঘরটি বেশ অপরিষ্কার দেখতে পায় দুদক টিম। ক্যান্টিনের খাবার কার্ডের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়, তবে কার্ডের বিপরীতে টাকা জমার সময় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
দুদক টিম কারা হাসপাতাল পরিদর্শনকালে দেখতে পায়, সেখানে তাদের নিজস্ব কোনো ডাক্তার ও নার্স নেই। একজন ডাক্তার প্রেষণে কর্মরত আছেন। হাসপাতালটি উচ্চ সংক্রমণ ঝুকিপূর্ণ এলাকা হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে না।
অভিযানকালে দুদক টিম কতিপয় কারারক্ষীর যোগসাজশে কিছু কয়েদিদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
কারাগারে রান্নাঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, খাবারের মানোন্নয়ন, প্রায় দুই হাজার কারাবন্দির জন্য পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্সসহ সব আধুনিক চিকিৎসা সুবিধাসহ আলাদা ৫০-১০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ এবং কারাগারে কয়েদিদের মোবাইল ফোন সরবরাহের বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বগুড়ার উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে রাস্তা নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, বগুড়ার সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
দুদক টিম সরেজমিনে সড়ক ও জনপথ কার্যালয় পরিদর্শন করে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করেছে। দুদক টিম অভিযোগকারী, ঠিকাদার এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের নিয়ে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে এবং তথ্য সংগ্রহ করে। টিম সংগৃহীত তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণপূর্বক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এছাড়াও দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিয়ে কমিশনকে অবহিত করার জন্য ৮টি দপ্তরে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২২
এসএমএকে/এমজেএফ