বরিশাল: প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) এক ছাত্রীকে প্রকাশ্যে মারধর করেছেন সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র নুজাইম শাওন।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রী সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় এবং কলেজ প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বাংলানিউজকে জানান, কলেজছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় দুইজনের নামে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। হামলাকারীদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ওই ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় আমরা কলেজের প্রফেসর আক্তারুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। প্রতিবেদন পেলেই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মারধরের শিকার ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র নুজাইম শাওন বিভিন্ন সময়ে তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। এক বছর আগে শাওন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছেন। সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। এতে ওই ছাত্রীর পরিচিতদের কাছে একাধিকবার হুমকিও দিয়েছেন শাওন। সর্বশেষ রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সোনালী ব্যাংক শাখার বিপরীতে জনতা লাইব্রেরির সামনের সড়কে তাকে আটকে মারধর করেন শাওন। মারধরে তার হাত থাকা মোবাইল ফোন পড়ে ভেঙে যায়। মারধরের ঘটনা কাউকে জানালে শাওনের সহযোগী বিএম কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাগর ওই ছাত্রীকে কলেজে ঢুকতে দেবে না বলেও হুমকি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাওনকে পাওয়া যায়নি তবে অপর অভিযুক্ত সাগর জানান, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক হলে তার কক্ষে এক সঙ্গে থাকেন নুজাইম শাওন। ছাত্রলীগ নেতা রইজ আহম্মেদ মান্না এখানে শাওনকে থাকতে দিয়েছেন। ওই ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের সর্ম্পক ছিল শাওনের। সম্প্রতি আরেক ছাত্রীর সঙ্গে শাওন প্রেমের সর্ম্পকে জড়ান। তবে রোববার তার সাবেক প্রেমিকাকে একা পেয়ে রাস্তায় আটকে মারধর করতে থাকেন শাওন। সাগরের দাবি এ ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থলের পাশে থাকায় দ্রুতই দুজনকে দুদিকে সরিয়ে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নুজাইম শাওন সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের ছাত্র হলেও ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ছাত্রাবাসে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে থাকতেন। তার বিরুদ্ধে এর আগেও ছাত্রকে মারধর ও ছাত্রীদের উত্ত্যক্তের অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে বিএম কলেজে অধ্যক্ষ গোলাম কিবরিয়া আরও বলেন, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ছাত্রাবাসে কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কারো থাকার অনুমতি নেই। যদি কেউ থেকে থাকেন তা অবৈধভাবে ছিলেন। যারা তাদের রেখেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
এমএস/আরআইএস