ঢাকা: করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে অর্ধেক জনবল নিয়ে চলছে দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়।
মন্ত্রণালয়গুলো উইং প্রধানদের দায়িত্ব দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় গত রোববার (২৩ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ সব ধরনের অফিসে জনবল অর্ধেক কমানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার সচিবালয় ঘুরে দেখা গেছে, এদিন সচিবালয়ে কোন দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ফলে সচিবালয় প্রাঙ্গণে অন্যদিনের তুলায় চাপ ‘কিছুটা কম’ দেখা গেছে। মন্ত্রণালয়গুলোর করিডোরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনাগোনা বা ছুটাছুটিও তুলনা কম। বিভিন্ন দপ্তর অর্ধেক জনবল নিয়ে চলছে। অনেক দপ্তরের প্রবেশ মুখে তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে। অযথা কাউকে দপ্তরে প্রবেশ ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) আব্বাস উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, রোববার প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে সবাই কার্যকর করছে। সবাই রোস্টার অনুযায়ী কাজ করছেন। রোস্টার না থাকায় সোমবার কেউ কার্যকর করতে পারেনি। আমরা উইং প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছি প্রয়োজন অনুযায়ী জনবল রাখতে, বাকিদের বিরতি দিতে। উইং প্রধানরা প্রয়োজন অনুযায়ী এক দিন পর পর রোস্টার করেছে। আমরা অর্ধেক জনবল নিয়ে কাজ করছি। যাদের একেবারেই কাজ কম তাদের বলেছি অফিসে না আসতে। প্রয়োজন হলে ফোন করে আনা হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এভাবেই চলবে।
তিনি জানান, এছাড়া রোস্টার অনুযায়ী যারা ছুটিতে থাকবেন তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ল্যাপটপ দেওয়া হবে যাতে বাসায় বসে কাজ করতে পারেন। আমাদের মন্ত্রণালয়ের দুইজন আক্রান্ত হয়েছেন। তারা বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমাদের কেনাকাটা এখনও শুরু হয়নি। দুই একদিনের মধ্যেই মন্ত্রণালয়ের প্রবেশমুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ প্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-১ শাখার মো. ইউসুফ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের চারটি উইং রয়েছে। চার দিন চার উইং কাজ করবে। কে, কবে ডিউটি করবেন- সেটা উইং প্রধান সিদ্ধান্ত নেবেন। আজ (২৫ জানুয়ারি) আমরা একটি উইং কাজ করছি। প্রয়োজন অনুযায়ী উইং প্রধান যে কাউকেই ডিউটি দিতে পারেন।
এ বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. গিয়াসউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের নির্দেশ মতো মঙ্গলবার থেকে আমরা অর্ধেক জনবল নিয়ে কাজ করছি। পাস বন্ধ করে দেওয়ায় দর্শনার্থী কমে গেছে। উইং প্রধানরা রোস্টার অনুযায়ী কাজ করছেন। রোস্টারে পাঁচ দিন এক গ্রুপ ডিউটি করবে এরপর তারা বিরতিতে যাবে। দ্বিতীয় গ্রুপ পরবর্তী পাঁচ দিন ডিউটি করবে। এভাবে আমাদের রোস্টার করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস জনিত পরিস্থিতি বিবেচনায় সোমবার (২৪ জানুয়ারি) থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শর্ত সাপেক্ষে সার্বিক কার্যক্রম ও চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হলো।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অর্ধেক জনবল নিয়ে পরিচালনা করতে হবে।
অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের দাপ্তরিক কার্যক্রম ভার্চ্যুয়ালি (ই-নথি, ই-টেন্ডারিং, ই-মেইল, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপসহ অন্যান্য মাধ্যমে) সম্পন্ন করবেন। সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবেন। ব্যাংক-বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, ২৫ জানুয়ারি,২০২২
জিসিজি/এমএমজেড