পালকি চলে রে, অঙ্গ টলে রে! আর দেরি কত? আর কত দূর?
সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের পালকি চলে কবিতার শেষাংশের মতো উচ্ছলতাময় এক বিয়ে হয়ে গেল কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে। আধুনিক যুগের হেলিকপ্টার ও চল্লিশের দশকে হারিয়ে যাওয়া পালকির মিশেলে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা দেখল এলাকার মানুষ।
বিয়েটা হলো এমন- বর এলেন হেলিকপ্টারে। বিয়ের কাজ শেষ। এবার যাবার পালা। কনে উঠে গেলেন পালকিতে, সাথে বর। বেহারারা বর-কনেকে নিয়ে গেলেন প্লেনের কাছে। এবার দুজন উঠে গেলেন হেলিকপ্টারে! উপজেলার জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের দামুরপাড়া গ্রামে এ বিয়েটি সম্পন্ন হয়।
জানা যায়, বাবার ইচ্ছা পূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে বোন জামাই, ভাই ও মা-বাবাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে বিয়ে করতে যান জাকির হোসেন। কনের বাড়ি একই ইউনিয়নের দামুরপাড়া গ্রামে। এসময় হেলিকপ্টারে বরযাত্রা দেখতে এলাকায় শত শত উৎসুক নারী-পুরুষ ভিড় করেন।
জাকির হোসেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি স্থানীয় ভোগই বাজারে হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করেন। এছাড়া এলাকায় তার একাধিক মাছের প্রজেক্ট রয়েছে। তার বাবা জালাল আহমেদ কুয়েত প্রবাসী। দামুরপাড়া গ্রামের ডা. গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে ফারজানা আঁখির সঙ্গে বিয়ে হয় জাকিরের।
জালাল আহমেদ বলেন, তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের মধ্যে জাকির সবার বড়। তার দীর্ঘদিনের শখ ছিল বড় ছেলেকে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বিয়ে করাবেন। নিজের শখ পূরণে রাজধানী ঢাকা থেকে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকায় একটি হেলিকপ্টার ভাড়া করেন তিনি। একটি পালকি নিয়ে আসা হয়। বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর চারজন বেহারা বর-কনেকে পালকিতে করে নিয়ে যান প্লেনের কাছে। এভাবে ছেলেকে বিয়ে করাতে পেরে তিনি আনন্দিত।
জামাই হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে আসায় খুশি জাকির হোসেনের শ্বশুর গিয়াস উদ্দিনও। তিনি বলেন, ‘আমি গর্বিত যে জামাই হেলিকপ্টারে আমার মেয়েকে নিতে এসেছে। এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে!'
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
এমএমএস