বরিশাল: সংবাদ সম্মেলনের পর এবার আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠী ইউনিয়নের পশ্চিম তেতলা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক রতন ঘরামী।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে বরিশালের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বানারীপাড়া আমলী আদালত) আদালতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ম্যানেজারসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মজিবর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে বিচারক মো. জহির উদ্দিন পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইব্রাহিম বেপারী, সংসদ সদস্য (বরিশাল-২) মো. শাহ আলমের ম্যানেজার আল আমিন এবং তাদের সহযোগী তুহিন গাজী ও ইলিয়াস খান।
মামলার এজাহার তালিকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের নাম না থাকলেও ঘটনার বিবরণে তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী রতন ঘরামী কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ১৫ দিন আগে আনুমানিক রাত ৮টার দিকে সংসদ সদস্য শাহে আলম বাদীকে তার বাসায় ডেকে পাঠান। কৃষক রতন ঘরামী এমপির বাসায় গেলে তাকে প্রজেক্ট করার কথা বলে ১৫ কাঠা জমি লিখে দিতে বলেন। এ কথা শুনে বাদী উত্তর না দিয়ে চলে আসেন। যার ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৪ জানুয়ারি) রাত ১১টায় এমপি শাহে আলমের ম্যানেজার আল আমিনসহ মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা বাদী রতন ঘরামীর বসত ঘরে প্রবেশ করেন এবং পুনরায় ১৫ কাঠা জমি এমপির নামে লিখে দিতে বলেন। জমি লিখে না দিলে দেশে বসবাস করতে পারবে না বলে হুমকি দেয়।
মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন, আসামিরা থাকা দা-চাকু দিয়ে প্রাণ নাশ ও একের পর এক মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় বাদী চিৎকার দিলে স্বজনরা ৯৯৯ এ ফোন করে। এরপর রাত ২টা ২০ মিনিটে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় মামলার আসামি তুহিন গাজী ও ইলিয়াস খানকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটক করতেও সক্ষম হয়। কিন্তু তাদের পরের দিন ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত ৬ মাস ধরে আসামিরা বাদীকে ভয়ভীতি ও নানাভাবে হয়রানি করছে বলেও মামলায় বাদী উল্লেখ করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মজিবর রহমান বলেন, ৩৪২, ৩৮৭, ৩৮৯ ধারায় দায়েরকৃত এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রত্যাশা করেছেন বাদী।
মামলার বাদী রতন ঘরামী জানিয়েছেন, স্থানীয় এমপির নির্দেশে তিনিসহ ১৩টি সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর অত্যাচার ও জমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বরাবর লিখিত দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি নিরাপত্তার পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। গতকাল থানায় মামলার এজাহার নিয়ে গেলে পুলিশ তা নেয়নি, বরং দায়িত্বরত অফিসার আমাকে মুঠোফোনে গালাগাল করেন।
যদিও শুরু থেকে এ ঘটনা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করে আসছেন শাহে আলম এমপি। ষড়যন্ত্র করে বিরোধীপক্ষ এটাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করছেন বলে দাবি তার।
আরও পড়ুন>>
জমি দখলের চেষ্টা, এমপি শাহে আলমের বিরুদ্ধে কৃষকের অভিযোগ
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
এমএস/এমআরএ