ঢাকা: চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমার বা আমার পরিবারের এই জায়গা থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত যে জমিটি আছে সেখানে আমার বা আমার পরিবারের কারো কোনো জমি নেই। আমার ভাইয়ের অল্প কিছু জমি ছিল, সেটা তিনি হস্তান্তর করে দিয়েছেন। যেহেতু এটি থাকলে অধিগ্রহণের সময় তিনি লাভবান হবেন, আমি যেহেতু একটা দায়িত্বে আছি, সেহেতু তিনি অধিগ্রহণের আগেই এটি হস্তান্তর করে দিয়েছেন।
এছাড়া আমার বা আমার পরিবারের এই জায়গা থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত। যারা এই বিষয়ে এমন তথ্য ছড়িয়ে হয়রানি বাড়াচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান দীপু মনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে সরকারি বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, একটি কথা হলো আরও কিছু মানুষকে আমার পরিবারের সদস্য বলা হয়েছে। তারা আমার রক্তের সম্পর্কের কেউ নয়। কিন্তু তারা আমার রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। সেখানে আমাদের কোনো জমি নেই। অর্থনৈতিক সম্পর্ক নেই। জাহিদুল ইসলামকে বলা হচ্ছে, আমার মামাতো ভাই, কিন্তু তা না। আমার নানা এবং ওর দাদা আবার কাজিন। তবে আমার সাথে ওর সম্পর্কটা রাজনৈতিক। পারিবারিকভাবে তেমন কিছু নয়। সেলিম খান আমাদের এলাকার রাজনৈতিক কর্মী। সেদিক থেকে সবারই ঘনিষ্ঠতা আছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জমির মূল্য নির্ধারণ করেন জেলা প্রশাসক। ৬২ একর জমির বাজার মূল্য ১৯৩ কোটি টাকা। আগে এসেছিল ৫৫৩ কোটি টাকা। ১৯৩ এর ২০ গুণ কীভাবে ৫৫৩ কোটি হয়! এছাড়া কয়েকটি জায়গায় দেখলাম এটাকে ভাঙন প্রবণ এলাকা বলে দাবি করা হয়েছে। কতগুলো বিবেচনায় এটা আমরা নির্বাচন করেছিলাম। এর বাইরে যে দুটো জায়গা দেখেছিলাম তা একদম হাইওয়ের পাশে। এছাড়া এটি নদীর পাশে। শিক্ষার জন্য উপযুক্ত পরিবেশের একটি জায়গা। এর পাশে আমাদের বাঁধও আছে। যখনই একটা বড় প্রজেক্ট হাতে নিতে যাই, তখনই একটি মহল এর বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করে।
দীপু মনি বলেন, আমার বা আমার পরিবারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আঙ্গিক থেকে জেলা পর্যায়ে কেউ কেউ কথা বলতে পারেন। তবে প্রতিযোগিতা প্রতিহিংসায় রূপান্তরিত হওয়া উচিত না। আর এর সাথে যে-ই জড়িত থাক, সুষ্ঠুভাবে বিচার হওয়া উচিত। এছাড়া জমি-জমা সম্পর্কে আমি অত ভালো বুঝি না। দাগ খতিয়ান নিয়ে যতটুকু না জানলে না, ততটুকু। আর এ বিষয়ে যে আমার বা আমার পরিবারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, তা প্রমাণের জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন তা সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়েছে।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে তিনি দাবি করেছেন, এই প্রক্রিয়ায় সরকারের প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। যদিও জেলা প্রশাসক তার প্রতিবেদনে কারও নাম উল্লেখ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ