সাভার (ঢাকা): খোলা মাঠে বড় প্যান্ডেল করে বিশাল সমাবেশের আয়োজন চলছে। ধীরে ধীরে মিছিল নিয়ে জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
বিশাল মঞ্চে নেতাদের উপচে পড়া ভিড়। মানুষের চাপে প্যান্ডেলের বাইরেও দাঁড়িয়েছে মানুষ। মঞ্চ ও মঞ্চের সামনে সমবেত হওয়া বেশিরভাগের মুখেই মাস্ক নেই। নেই স্বাস্থ্যবিধির কোনো চিহ্ন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এমন চিত্রই দেখা গেছে সাভারের আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের তৈয়বপুর ফুটবল খেলার মাঠে।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে যখন নতুন করে বিধিনিষেধ চলছে তখন আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের আয়োজনে মাঠে চলছে এই সম্মেলন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তৈয়বপুর মাঠ এলাকায় সমাবেশ স্থলে দুপুর ২টার পর থেকেই দলে দলে মিছিল নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। প্রায় ৩ হাজার লোক সমবেত হন। এ সময় মিছিলে আসা কারো মুখেই দেখা যায়নি মাস্ক। এছাড়া সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখেই গাদাগাদি করে আসনগুলোতে বসানো হয়েছে লোকজনকে।
অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফারুক হাসান তুহিন উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় প্রধান অতিথি আগামী তিন বছরের জন্য মুজিবর রহমান শাহেদ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মুসার নাম ঘোষণা করে নতুন কমিটি গঠন করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, নতুন করে করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমাবেশের কারণে আমাদের এলাকায় করোনা সংক্রমণের প্রকোপ বেড়ে গেল। ঘরোয়াভাবে অল্প লোকজন নিয়েও তারা অনুষ্ঠানটি শেষ করতে পারতো।
তবে আশুলিয়া থানা সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য ব্যারিস্টার ইমাম হাসান ভুঁইয়া বলেন, সরকার আমাদের জন্য যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সেই বিধিনিষেধগুলো তখনি কার্যকর হবে, যখন সমাজের সব শ্রেণীর মানুষ সেই বিধিনিষেধ মেনে চলবেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই বিষয়গুলো তদারকি করবেন। যেভাবে সংক্রমণ বেড়ে চলছে এমন পরিস্থিতিতে বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় আয়োজন এলাকার জন্য মানুষের মধ্যে করোনা বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফারুক হাসান তুহিন বাংলানিউজকে বলেন, অনুষ্ঠানটি পূর্ব ঘোষিত ছিল। তাই বিধিনিষেধে আমরা অনুষ্ঠানটি বন্ধ রাখতে পারিনি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২০০ লোক নিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ করার হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বাংলানিউজকে বলেন, আজকে সাভারে কোভিড আক্রান্তের হার ৫০ শতাংশ। যা খুবই উদ্বেগজনক, কোনো ধরনের পাবলিক সমাবেশ করতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছোট পরিসরে করার নির্দেশনা রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন মেনে এই ধরনের অনুষ্ঠান না করাই উচিত।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রজ্ঞাপনে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নতুন করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ১০০ জনের অধিক লোক নিয়ে কোনো সমাবেশ করা নিষেধ রয়েছে। মন্ত্রী ও স্থানীয় থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
এসএফ/কেএআর