নরসিংদী: নরসিংদীতে দিনের বেলায় বাড়ির ভেতরে ডুকে মানসুরা আক্তার (২৩) নামে এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে পৌর শহরের সাটিরপাড়া এলাকার সাত্তার ভিলাতে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ মানসুরা আক্তার সদর উপজেলার পাঁচদোনা এলাকার মজিবুর রহমানের মেয়ে। একইসঙ্গে সাটিরপাড়া কে কে ইনস্টিটিউশন ও কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক মসিউর রহমান হিমেলের স্ত্রী। তিনি নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, প্রায় ৫ বছর আগে সাটিরপাড়া কে কে ইনস্টিটিউশন ও কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক মসিউর রহমানের সঙ্গে পাঁচদোনা এলাকার মজিবুর রহমানের মেয়ে মানসুরা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের কোল জুড়ে জান্নাতুল নামে ৪ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। প্রতি শুক্রবার সকালে নিহতের স্বামী হিমেল বেলাবো উপজেলার সল্লাবাদ ইউনিয়নের ইব্রাহীমপুর তার গ্রামের বাড়িতে যান। আজও সকালে তিনি গ্রামের বাড়িতে যান। দুপুর দেড়টার দিকে স্ত্রী মানসুরাকে মোবাইল ফোনে কল দেন হিমেল। একাধিকবার ফোন দিলেও মানসুরা ফোন না ধরায় হিমেল বিষয়টি তার শ্বশুরকে জানান এবং তার বাড়িতে পাঠান। সেখানে গিয়ে নিহতের বাবা মেয়ের গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় নাতিকে ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। পরে স্বজন ও পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসাপাতাল মর্গে পাঠায়। এদিকে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহতের বাবা মজিবুর রহমান কান্না করতে করতে বলেন, জামাইয়ের ফোন পেয়ে মেয়ের বাড়িতে এসেছিলাম। এসে দেখি মেয়ে গলাকাটা অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছে। আমার মেয়ের রক্তে পুরো ফ্লোর ভরে ছিল। খুবই নৃশংস ও নির্মমভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। মেয়ের ছোট বাচ্চাটা এখন মাকে ছাড়া কীভাবে থাকবে। আমি আমার মেয়ে হত্যাকারীদের বিচার চাই।
নিহতের ভাই সবুজ বলেন, আমি দেড়টার দিকে বোনকে ফোন দিয়েছিলাম। ফোন আমার ভাগনি ধরেছিল। সে তখন বলেছিল মা রান্না করছে ফোনে কথা বলতে পারবে না। পরে বিকেলে বোনের মৃত্যুর সংবাদ পাই। আমি বোন হত্যার বিচার চাই।
নিহতের দেবর জাহিদ বলেন, ভাই-ভাবির খুব সুখের সংসার ছিল। তাদের মধ্যে কোনো পারিবারিক কলহ ছিল না। প্রতি সপ্তাহের মতো ভাই আজকেও গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল। ভাবি আর ভাতিজী একলা বাসায় ছিল। হঠাৎ করে কেমনে কী হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড তা এখনো স্পষ্ট নয়। তদন্ত চলছে। অচিরেই সব কিছু খোলসা করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২২
আরএ