ফরিদপুর: লেখাপড়ার পাশাপাশি যে বয়সে হেসে খেলে বেড়ানোর কথা, সে বয়সে পেটের দায়ে নিজের অন্ন সংস্থানের দায়িত্ব নিজেরই কাঁধে তুলে নিতে হয়েছে। দু বেলার খাবার জোগান দেওয়ার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
বলছি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের ডোবরা গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে হাসিবুলের কথা। খুব ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়েছে সে। সে কথা ঠিকভাবে তার মনেও নেই। উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের ডোবরা গ্রামে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। এরপর তাকে ফরিদপুর মুসলিম মিশনের এতিমখানায় রেখে এসে তার মা আবার বিয়ে করে। কিন্তু এতিমখানায় তার মন না টেকায় সেখান থেকে কিছুদিন পরে গ্রামে চলে আসে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে হাসিবুলের সঙ্গে দেখা হয় বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ সময় দেখা যায় লাঠির সঙ্গে লাল-সাদা রংয়ের হাওয়াই মিঠাই লাগিয়ে এদিক ওদিক ঘুরছে সে। লক্ষ্য তার চেয়েও ছোট কিংবা তার মতো শিশুদের কাছে বিক্রি করা।
কথা হলে হাসিবুল জানায়, পেটের দায়ে উপায় না দেখে এ পথ বেচে নিয়েছে সে। একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ময়না ইউনিয়নের হাটখোলারচর গ্রামের আব্দুল গফফার শেখ হাওয়াই মিঠাইর কারিগর। তার স্বজনদের মাধ্যমেই গফফার শেখের সঙ্গে পরিচয় তার। স্বজনদের হাত ধরেই গফফার শেখের বাড়িতে আসে জীবিকার খোঁজে। এরপর থেকে গফফার শেখ হাওয়াই মিঠাই তৈরি করেন আর সে (হাসিবুল) উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে সেগুলো বিক্রি করে।
হাসিবুল জানায়, প্রতিদিন সে ৫০০-৬০০ টাকার হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে। মালিক গফফার শেখ তাকে খাওয়া-দাওয়া, থাকা বাদে মাসিক ১ হাজার ৫০০ টাকা দেন। বারো বছর বয়সী অনাথ, নিরাশ্রয় হাসিবুল জানে না তার অনাগত ভবিষ্যতের কথা। জানতেও চায় না।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
জেডএ