নারায়ণগঞ্জ: পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রী ও শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে নারায়ণগঞ্জ থেকে ৫টি রুটে চলাচলকারী ৭০টি লঞ্চ চালুর দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা।
আগামী ১৮ এপ্রিলের মধ্যে লঞ্চ চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলে শ্রমিকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ শিকদার মাষ্টার। এতে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি মো. মঈন মাহামুদ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা শ্রমিকলীগের নেতা মো. শহীদুল্লাহ, জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন চুন্নু, জুয়েল প্রধান, কবির হোসেন, আক্তার হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সবুজ শিকদার বলেন, গত ২০ মার্চ নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যায় কার্গো জাহাজ এমভি রূপসী-৯ এর ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এম এল আফসার উদ্দিন ডুবে ১০ জন যাত্রী নিহত হয়। এরপর থেকে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ থেকে সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে করে লঞ্চ শ্রমিক ও কর্মচারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীপথে দুর্ঘটনা ও মানুষের প্রাণহানি হোক সেটা আমরাও চাই না। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে যুক্ত শ্রমিক ও কর্মচারীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের কোনো ধরনের ব্যবস্থা না করে হঠাৎ করে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় শ্রমিক ও কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পবিত্র মাহে রমজান চলছে ও পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। অথচ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে যুক্ত প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কর্মচারী ও তাদের পরিবার বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এসব শ্রমিক ও কর্মচারীদের পরিবার অনাহার অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। বিআইডব্লিউটিএ যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ করলেও যাত্রীরা। কিন্তু ঠিকই সাধারণ ছোট ট্রলারযোগে শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও মেঘনা দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে।
সবুজ শিকদার আরও বলেন, সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাতেও অসংখ্য প্রাণহানি ঘটে সেক্ষেত্রে কিন্তু সড়ক পথে যান চলাচল বন্ধ করা হয় না। আমাদের নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর থেকে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোর চলাচল বন্ধের আগে কিছু সময়সীমা বেঁধে দেওয়া দরকার ছিল যাতে মালিকরা তাদের লঞ্চগুলো পরিবর্তন করে নতুন লঞ্চ চালু করতে পারে। আমাদের দাবি, লঞ্চ মালিকদের একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে লঞ্চগুলোর আকার বড় করে চলাচলের সু-ব্যবস্থা করা হোক। এতে করে শ্রমিক কর্মচারীরাও কাজে ফিরতে পারবে এবং যাত্রীরাও স্বল্প খরচে চলাচল করতে পারবে। যদি ১৮ এপ্রিলের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়, তাহলে শ্রমিক কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচিসহ কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। অন্যথায় লঞ্চ শ্রমিক কর্মচারীরা অভাব অনটনের কারণে বিপথগামী হতে পারে। কারণ গত দুই বছরে করোনাকারীন সময়ে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় লঞ্চ শ্রমিক ও কর্মচারীরা দুঃসময়ে ছিল। এখন যদি লঞ্চগুলো আবারও চালু করা না হয় তাহলে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকাটা দুঃসাধ্য হবে। তাই শ্রমিক-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের কথা এবং ঈদে ঘরমুখো যাত্রী কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ নদী ন্দর থেকে ৫টি রুটে লঞ্চ চালুর দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
এমআরপি/এএটি