সিলেট: কদিন বাদেই সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা পৌর নির্বাচন। ভোটের ডামাডোল বাজতেই উপজেলাজুড়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের প্রচার প্রচারণা চলছে।
এর মধ্যেই উপজেলার শীর্ষ নেতাদের স্বীকার করতে হচ্ছে ত্যাগও। দলীয় নির্দেশে নিজের প্রার্থীরা বাতিল করে সমর্থন দিতে হচ্ছে অপর দলীয় বা বিদ্রোহী প্রার্থীকে।
এমন ঘটনা ঘটেছে, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জনপ্রিয় দুই প্রার্থীর সঙ্গে। একজন আবু নাসের পিন্টু অপরজন সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ। পিন্টু গতবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন। মাসুক আওয়ামী লীগের নেতা।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) শেষ দিনে নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এ দুই প্রার্থী। পৌর নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিয়ানীবাজার সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুকুল হককে সমর্থন দিয়ে নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। সমর্থন পাওয়া ফারুকুল হক ১৯৯৪ সালে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ছিলেন।
গুঞ্জন উঠেছে, আ. লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হাজি আব্দুল কুদ্দুছ টিটুকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচনে মেয়র পদের প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু নাসের পিন্টু।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পিন্টু ও টিটুর বাড়ি পৌর শহরের শ্রীধরা গ্রামে। দলীয় সিদ্ধান্ত এবং একই গ্রামের হওয়ায় সম্প্রীতি বজায় রাখতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে পিন্টু সরে দাঁড়িয়েছেন।
কিন্তু সমর্থনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পিন্টু। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। দলীয় নির্দেশনা মানতেই তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে সরার প্রশ্নই আসে না।
বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে দলের চেয়ে আঞ্চলিকতার প্রাধান্য বেশি। পিন্টু না বললেও শেষ পর্যন্ত তিনি যদি আব্দুল কুদ্দুছ টিটুকে সমর্থন করেন; তাহলে নির্বাচনের পুরো চিত্র পাল্টে যেতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর আওয়ামী লীগ নেতা মাসুক আহমদ জানান, তিনি এবং তার সমর্থিত প্রার্থী ফারুকুল হক দুজনই কসবা গ্রামের বাসিন্দা। ফারুকুল একজন ভালো মানুষ হিসেবে তাকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি, বলেন মাসুক।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন বৃহস্পতিবার নিজেদের প্রার্থিতা ফিরিয়ে নিয়েছেন উপজেলার ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদের দুই প্রার্থী আব্দুর রউফ ও কবির আহমদ।
এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে বর্তমান মেয়র আব্দুস শুকুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আরও ৯ প্রার্থী। তারা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ফারুকুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রভাষক আব্দুস সামাদ আজাদ, আ. লীগ বিদ্রোহী আব্দুল কুদ্দুছ টিটু, আহবাব হোসেন সাজু, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী আবুল কাশেম, স্বতন্ত্র মো. আব্দুস সবুর, অজি উদ্দিন ও সুনাম উদ্দিন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ভোটের দিন বিয়ানীবাজারসহ অনুষ্ঠিতব্য ছয় পৌরসভায় সিসি ক্যামেরা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। ফলে ইভিএম নিয়ে হতাশাগ্রস্ত প্রার্থীদের সন্দেহ অনেকটা দূরীভূত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভায় মেয়র-কাউন্সিলর ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আগামী ১৫ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২২
এনইউ/এমজে