ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অসময়ে বংশাই-লৌহজং নদীতে ভাঙন, পাকা রাস্তা-বাড়ি বিলীন

সুমন কুমার রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
অসময়ে বংশাই-লৌহজং নদীতে ভাঙন, পাকা রাস্তা-বাড়ি বিলীন

টাঙ্গাইল: যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি কমতে থাকায় টাঙ্গাইলের অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে প্রভাব পড়ছে। পানি কমার কারণে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বংশাই-লৌহজং নদীর পাড়ে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।

 

এক সপ্তাহের ব্যবধানে নদী ভাঙনের ফলে ফতেপুর বাজার সংলগ্ন এলজিইডির পাকা রাস্তা বিলীন হয়ে গেছে। অসময়ে নদী ভাঙনে মির্জাপুর উপজেলার সঙ্গে বাসাইল উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে জানা যায়, বংশাই ও লৌহজং নদীর মির্জাপুর উপজেলা অংশের ভাঙনকবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তারা অভিযোগ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

ফতেপুর এলাকার বাসিন্দা তসলিম খান, সাবেক সেনা সদস্য তাহের উদ্দিন, কৃষক মনির হোসেনসহ অনেকেই জানান, ফতেহপুর ইউনিয়নে প্রতিবছরই বংশাই নদী পাড়ে দুইবার ভাঙন দেখা দেয়। পানি বাড়ার সময় ও পানি কমার সময় এই দুই বার নদীর পাড় ভাঙতে থাকে। এ বছর পানি কমার সময় ভাঙনের মাত্রা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

তারা জানান, বংশাই নদীর ভাঙনের ফলে ফতেপুর, থলপাড়া, বৈল্যানপুর, হিলড়া আদাবাড়ি বাজার, গোড়াইল, গাড়াইল, পুষ্টকামুরী পূর্বপাড়া, বাওয়ার কুমারজানি, ত্রিমোহন, বান্দরমারা, যুগিরকোপা, রশিদ দেওহাটা চাকলেশ্বরসহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লৌহজং নদী তীরেও একই অবস্থা দেখা দিয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানায়, নদী ভাঙনে তাদের লাখ লাখ টাকার ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শুকনো মৌসুম হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তারা কোনো অনুকম্পা বা সহায়তা পাননি।

লৌহজং নদীর পানি কমতে থাকায় মাঝালিয়া, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বরাটি, পুষ্টকামুরী, দেওহাটা, কোর্ট বহুরিয়া, বহুরিয়া, কামারপাড়া, নাগরপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার পরিবারগুলো নদীতীর ভাঙনের ফলে দিশেহারা হয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু অসময়ে নদী ভাঙনের কথা কেউ আমলে নিচ্ছে না।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা নিচ্ছে। এছাড়া এলজিইডির রাস্তাটি ভেঙে নদীতে বিলীন হওয়ায় ওখান দিয়ে আর রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। ঘটনাস্থল পরির্দন করে আশপাশ বা অন্য কোনো স্থান দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, বংশাই ও লৌহজং নদীতে পানি কমতে থাকায় কোনো কোনো এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক পর্যায়ে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ব্লক ফেলে স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রাক্কালন পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ জানান, অসময়ে নদী ভাঙনে গাড়াইল, পুষ্টকামুরী উত্তরপাড়া, বাওয়ার কুমারজানিসহ বেশ কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তিনি ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।