জাগরণ মঞ্চ, স্বাধীন ব-দ্বীপে আগে কখনো এর চেয়ে বড় অরাজনৈতিক পাটাতন জেগে ওঠেনি। সমাবেশে যাওয়ার জন্য এতো প্রাণচাঞ্চল্যও কখনো শুনিনি বা দেখিনি, এমন মুর্হুমুর্হু শ্লোগানে গত চল্লিশ বছরে আরেকটিবারও গর্জে ওঠেনি এই নাগরিক স্রোত।
টানা তিন সপ্তাহধরে লাখ মানুষের স্রোত-সমাগম। অথচ কোন অঘটন নেই, শৃঙ্খলাচ্যুতির নজির নেই। কেউ কাউকে ধমকে দিচ্ছে না, তারপরেও কোথাও কোন বাড়াবাড়ি নেই। বাংলার পুরাতন চিরকুট খুঁজে খুঁজে এমন সভ্য আন্দোলনের ইতিহাস আর একটিও নেই।
শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর, শধুমাত্র আন্দোলন বললে ভুল হয়। স্বাধীন বাংলার ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় জাগরণ, ইতিহাসের পাপ মোচনের দাবিতে তারুণ্যের গণ জাগরণ। যে যার নিজের মতো সময়ে আসছে, আবার চলে যাচ্ছে, দরকারি কাজ শেষ করে আবার আসছে সুযোগ পেলেই, আত্মা-নিবেদনের এমন দৃষ্টান্তও মনে হয় চার দশকে কখনো দেখায়নি নাগরিক।
লাখ জনতা। ছাত্র-ছাত্রী, ইমাম সাহেব, আলেম-ওলামা, ছোট ছোট বাবুকে কোলে নিয়ে মা, গৃহিনী-কর্মজীবী, নতুন দম্পতি, থুরথুরে বুড়ো-বুড়ি, খেলা ফেলে চলে আসা সবুজ জার্সি। পাহাড়ী-বাঙালি, জ্ঞাতি-ধর্মে-বর্ণে মিলেমিশে শ্রদ্ধায় পাশাপাশি।
শ্লোগানে শ্লোগানে একটাই দাবি- ফাঁসি,ফাঁসি, ফাঁসির দাবি। রাজাকারের ফাঁসির দাবি। ঘৃণার এমন গণধিক্কার, দাবির জন্য প্রবল আকুতি- দ্যাখেনি বহুদিন বাংলার মাটি। এইতো সবার চোখেই জল, চোখগুলো আবার ফুলকি ফুলকি-আগুন জ্বলে উল্কি-দুল্কি ফুল্কি-ফুল্কি।
আলীম হায়দার, মাস্টার্স শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বাংলাদেশ সময় ০৯৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৩
এমএমকে