ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

আপাদমস্তক একজন যথার্থ বাঙালির চিরবিদায়

বিশ্বজিত সাহা, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৪
আপাদমস্তক একজন যথার্থ বাঙালির চিরবিদায়

সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান গত ১১ জানুয়ারি পরলোকগমন করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।



বাংলাদেশ এ সময়ের একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারালো। অসম্ভব গুণী, ন্যায়ের প্রতীক, প্রাজ্ঞ, রবীন্দ্রপ্রেমী, গবেষক এবং সর্বোপরি  আপাদমস্তক একজন অসাম্প্রদায়িক বাঙালি ছিলেন বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। ২০০৬ সালে জাতির এক সন্ধিক্ষণে তিনি ছিলেন তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। ছিলেন দেশের কাণ্ডারি। বাংলাদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে দেশবাসীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেন। সে সময় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন অশুভ শক্তিকে তিনি হারিয়ে দিয়েছিলেন তার ন্যায়পরায়ণতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে। বন্ধ করে দিয়েছিলেন অনিবার্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। জয় বাংলা, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ সংস্কৃতির ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে তিনি শুরু করেন ‘বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক’ সংস্কৃতি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে তার নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি এখনো বাংলাদেশের হৃদয়ে চির অম্লান। তিনি থাকবেন চির জাগরুক হয়ে। যে বিষয়টি বিচারপতি হাবিবুর রহমান বিশ্বাস করতেন তা মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাই করে গেছেন। ভালোবাসতেন মানুষকে, ভালোবাসতেন বৃক্ষরাজিকে, সর্বোপরি ‘কর্মই ছিল তার ধর্ম’। কতো বিষয়ে যে তিনি কাজ করে গেছেন, অমূল্য সেসব রত্নরাজি বাঙালি জীবনের মননে থাকবে দীপ্যমান। বাঙালিত্ব, রবীন্দ্রনাথ, কোরান শরীফ অনুবাদ, কোরানসূত্র থেকে শুরু করে ‘বাংলাদেশের তারিখ’ নিয়ে তিনি কাজ করে গেছেন। বাংলা ভাষা নিয়ে তার গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘যথাশব্দ’সহ অসংখ্য কাজ করে গেছেন নিভৃতচারী এই মানুষটি।

আরেকটি অতি প্রয়োজনীয় কাজ করে গেছেন নিঃশব্দে- ‘১৯৭১ থেকে ২০১১ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপঞ্জি’। সংবাদকর্মী ও তথ্য সংগ্রাহকদের জন্য গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজ করবে।

আপাদমস্তক বিশ্বাসে, বোধে, কর্মে-সৃষ্টিতে তিনি ছিলেন বাঙালি  জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর যখন বাঙালি  জাতীয়তাবাদ নামক বোধ হারিয়ে যেতে বসেছিল যে কজন বাঙালি মনস্ক মানুষ নীরবে নিভৃতে বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিয়ে কাজ করে গেছেন বিচারপতি হাবিবুর রহমান ছিলেন তার মধ্যে অন্যতম। সেই ভাষা আন্দোলন থেকে। পাকিস্তানিদের চাপিয়ে দেওয়া উর্দু ভাষা থেকে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তিনি ছিলেন প্রথম সারিতে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে ১৪৪ ধারা ভাঙার নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। এ সময়ের একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানই শুধু নয়, দেশ একজন ভাষাসৈনিককেও হারালো।

১৯২৮ সালের ৩ ডিসেম্বর ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুর মহকুমার দয়ারামপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মৌলভী জহীরউদ্দীন বিশ্বাস ছিলেন একজন আইনজীবী। ১৯৪৮ সালে পিতার সঙ্গে রাজশাহীতে চলে আসেন। ঢাকা  বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও পরবর্তীতে এমএ পাস করার পর অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আধুনিক ইতিহাস বিভাগে ১৯৫৮ সালে ডিগ্রি লাভ করেন। প্রথমে রাজশাহী  বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পরবর্তীতে আইন ব্যবসাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। প্রধান বিচারপতি হিসেবে ১৯৯৬ সালে অবসর গ্রহণের পর পরই তিনি হয়েছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

অবসর গ্রহণের পর নিজেকে নিয়োজিত করলেন লেখালেখিতে। যদ্দুর মনে পড়ে ১৯৯৬ সালের আগস্ট মাসে একদিন বাংলাদেশের সৃজনশীল প্রকাশক আগামী প্রকাশনীর ওসমান গনির মাধ্যমে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের সঙ্গে পরিচয় হয় আমার। বিচারপতি হাবিবুর রহমানের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে থাকেন ধানমণ্ডিতে বাবার সঙ্গে। মেজ মেয়ে নুসরাত হাবিব ও ছোট মেয়ে রওনাক থাকেন আমেরিকায়। মেয়েদের ইচ্ছে, বাবা আমেরিকায় বেড়াতে আসেন। সে প্রসঙ্গেই কথা হলো বিচারপতি হাবিবুর রহমানের সঙ্গে।

প্রকাশক ওসমান গনি গল্প করেছিলেন বিচারপতি হাবিবুর রহমানের কাছে। বলেছিলেন, আমেরিকায় মুক্তধারার কার্যক্রমের কথা। বইমেলার কথা। ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘের সামনে অস্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করে প্রবাসী বাঙালিরা একুশের প্রথম প্রহর এবং বইমেলা শুরু করেন আমেরিকায়। প্রতি বছর বইমেলা উদ্বোধন করেন একজন লেখক। আর একুশের প্রথম প্রহরে প্রথম ফুল দেয় উপস্থিত সর্বকনিষ্ঠ শিশু। এ বিষয়টি বিচারপতি হাবিবুর রহমানকে আকৃষ্ট করে। আর এটি শুরু করে তখন মুক্তধারা, নিউইয়র্ক ও বাঙালির চেতনা মঞ্চের কয়েকজন তরুণ। তখনও মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের জন্ম হয়নি। বিচারপতি হাবিবুর রহমানের বাসা থেকেই ফোন করেন ওসমান গনি। কথা হলো।

মাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ ছাড়লেন, অথচ তার সঙ্গে প্রথম ফোনালাপে এমন আন্তরিকভাবে তিনি কথা বললেন, যা আমাকে মুগ্ধ করে। আমি মনে মনে ভাবি, বইমেলায় যদি বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে আনা যায়। তখন বইমেলা হতো ফেব্রুয়ারির শেষে অথবা মার্চ মাসে। ঢাকার একুশে বইমেলার সময়।

১৯৯৪ সালে ওসমান গনি প্রথম আসেন আমেরিকার বইমেলায়। সেবার ওসমান গনি ছিলেন বেশ কিছুদিন আমেরিকায় আমাদের আতিথ্যে। নিউ জার্সিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সম্মেলনেও তিনি যোগ দেন। ড. নূরননবী আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ওসমান গনিকে। সে সম্মেলনের কনভেনর ছিলেন ড. সিদ্দিকুর রহমান, এখন যিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি।

ফোবানা সম্মেলনের একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছিলেন প্রকাশক ওসমান গনি। সে অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি আমাকে বলেন বিচারপতি হাবিবুর রহমানের কথা। আমি ওসমান গনিকে বললাম বাংলাদেশ সম্মেলনের বিভক্তির কথা। বিভক্ত সম্মেলনে তিনি কি আসবেন? ওসমান গনি বললেন বিষয়টি তিনি জানেন। তারপরেও আমার মনের মধ্যে খচখচানি যায়নি। আমি একদিন কথা প্রসঙ্গে বিষয়টি বিচারপতি হাবিবুর রহমানকে জানিয়ে দিই। এবং তাকে সঙ্গে সঙ্গে জানাই কারা কারা ফ্লোরিডা সম্মেলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তারপর তিনি আশ্বস্ত হলেন মনে হলো। অতি দ্রæত ঘটনাগুলো ঘটলো।

বিচারপতি হাবিবুর রহমান শেষ পর্যন্ত আসলেন আমেরিকায়। ১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সম্মেলন ফ্লোরিডাতে। প্রকাশক ওসমান গনির মাধ্যমে প্রাথমিক যোগাযোগের পর একদিন আমি ড. নূরননবীকে জানালাম। দ্বিধাবিভক্ত বাংলাদেশ সম্মেলনের এক অংশের নেতৃত্বে ছিলেন ড. নূরননবী। মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, বিজ্ঞানী ড. নূরননবীকে জানাবার পর তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বিচারপতি হাবিবুর রহমানকে সম্মেলনে আনার সকল ব্যবস্থার উদ্যোগ নেন।

আমরাতো খুব খুশি। এই খুশির মধ্যেও কিছুটা শঙ্কা কাজ করে, তখন ফ্লোরিডার বাঙালিদের মধ্যেও সম্মেলনের পদ নিয়ে বিভক্তি হয়ে পড়ায়। তারপরেও আমরা মহাখুশি, মুক্তধারা এই প্রথমবারের মতো ফ্লোরিডাতে বইমেলা করতে যাচ্ছে, আর সেখানে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের মতো গুণী মানুষ প্রধান অতিথি। এছাড়াও সম্মেলনে প্রধান অতিথির নতুন গ্রন্থ ‘বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক’- এর মোড়ক উন্মোচন হবে।

অতি অল্প সময়ের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়কালের ঘটনা নিয়ে ‘বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক’ গ্রন্থটি প্রকাশের জন্য পাণ্ডুলিপি দেওয়া হয় প্রকাশনীকে। তাড়াহুড়ো করে ওসমান গনি প্রকাশ করে দিলেন গ্রন্থটি। বৃটিশ এয়ারওয়েজযোগে বইটি এনে সম্মেলনে মোড়ক উন্মোচনের ব্যবস্থা করি। ভীষণ খুশি হলেন তিনি।

যেদিন তিনি ফ্লোরিডায় আসলেন তার আগেই চলে এসেছে সদ্য প্রকাশ হওয়া গ্রন্থটি। সম্মেলনের সামনেই মুক্তধারার বইমেলা। এরপর শিল্পী আবুল ফজলের তোলা ছবির প্রদর্শনী। আর তার পাশে তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদের ‘মুক্তির গান’ প্রকল্পের জন্য ডোনেশন সংগ্রহের প্রদর্শনী। একই হোটেলে আমরা। আমাদের মেয়ে বহতার বয়স দুই হয়নি। এর মধ্যে আমি ও আমার স্ত্রী রুমা সাহা হাবিবুর রহমানের হোটেল কক্ষে গিয়ে দেখা করি। তারপর পরিকল্পনার কথা জানালাম।

সম্মেলনের আগের দিন সন্ধ্যায় তখন আমরা সকলে আড্ডা দিতাম। আমেরিকার বিভিন্ন শহর থেকে আসা বন্ধু-বান্ধব এবং আমন্ত্রিত অতিথিরাসহ সেই আড্ডা চলতো। মুক্তধারার কার্যক্রম ছাড়াও সাপ্তাহিক প্রবাসী (নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ১৯৯৯ সালে লুপ্ত হওয়া সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রবাসী) পত্রিকায় কাজ করার সুবাদে সকল সম্মেলনে আমি যেতাম। আর সাপ্তাহিক ঠিকানা থেকে যেতেন লিয়াকত হোসেন আবু। তখন নিউইয়র্ক থেকে এতো বাংলা পত্রিকা প্রকাশ হতো না। আরো দুই একটি কাগজ প্রকাশিত হলেও সেসব পত্রিকার সম্পাদক বা সাংবাদিকদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব হতো না।

পরদিন শুক্রবার সম্মেলন শুরু হবে। উদ্বোধন করবেন বিচারপতি হাবিবুর রহমান। আমরা আগে থেকে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছি। যাতে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান সঠিক সময়ে হয়। আমাদের বন্ধু শিল্পী আবুল ফজল তার ছবি প্রদর্শনীর জন্য সারা রাত জেগে ছবি টানানোর ব্যবস্থা করেন। সেকি চাপা উত্তেজনা ও উন্মাদনা।

হঠাৎ উদ্বোধনের আগেই হোটেলের সামনে বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ। এক পক্ষ আর এক পক্ষের সম্মেলন বন্ধ করার জন্য বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন একজন। আয়োজক কর্তৃপক্ষের হুড়োহুড়ি, পুলিশের সম্মেলন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি। সে যে কি অবস্থা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পর সম্মেলনের উদ্বোধন হলো। উদ্বোধন করলেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

এতো শঙ্কা-ঝামেলার মধ্যেও তিনি ধীর-স্থির এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং প্রবাসী  বাঙালিদের নিয়ে চমৎকার একটি বক্তব্য পাঠ করলেন। সমস্ত শঙ্কা দূর হয়ে গেল, সম্মেলন উদ্বোধন, বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, ফটো প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করলেন। প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে ছিলেন তিনদিন মিলে-মিশে।

সম্মেলন শেষে প্রিয় কন্যার সঙ্গে দেখা শেষে এলেন নিউইয়র্কে। সৌভাগ্য আমাদের। ৬৫, স্ট্রিটের উডসাইডের সেই বাসায় এসেছিলেন তিনি। যে বাড়ি থেকে আমরা ১৯৯১ সালে মুক্তধারার কার্যক্রম শুরু করি। একদিন ছিলেন আমাদের কাছে। একান্ত আপন হয়ে। পিতৃতুল্য মানুষটির স্নেহ-ভালোবাসায় আমরা হয়েছিলাম ঋদ্ধ। সেদিন একসঙ্গে এসেছিলেন তার বন্ধু জাতিসংঘে কর্মরত মাহফুজুর রহমান। এছাড়া আমরা কাউকে জানাইনি। ফ্লোরিডা সম্মেলনে তাকে নিয়ে যে টানা-হ্যাঁচড়া এবং ছবি তোলার ধুম পড়ে তিনি একেবারে পছন্দ করতেন না।

এরপরেও তিনি আমেরিকায় এসেছিলেন ফোবানা সম্মেলনে। এস্টোরিয়ার ক্রিস্টাল প্লেইসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিভক্তির ফোবানা সম্মেলন। আহ্বায়ক ছিলেন শেলী এ মুবদী। দুটো সম্মেলনের কোনোটিতেই তার অভিজ্ঞতাও ভালো ছিল না।

যোগ দিয়েছিলেন ২০০৮ সালে টরেন্টোর বইমেলায়। সেবারই টরন্টো বইমেলার প্রধান উদ্যোক্তা সাদী আহমেদ বিচারপতি হাবিবুর রহমানকে প্রথমবারের মতো কানাডায় নিয়ে আসেন। প্রায় দুই সপ্তাহ ছিলেন তিনি।

শেষবার আমেরিকায় এসেছিলেন গত বছর মেয়ের কাছে। ফোন করেছিলেন আমাদের। আমরা নিমন্ত্রণ করেছিলাম নিউইয়র্কে আসতে। বললেন, এবার আর আসবেন না। পরের বার আসবেন। পরের বার রয়েই গেল। অসাধারণ এই মানুষটিকে আর কোনোদিন আমরা পাবো না। দেশ অবিচল, নিষ্ঠাবান আর একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারালো। যিনি জাতির বিভিন্ন দুঃসময়ে আশার আলো দেখাতেন। ন্যায়ের কথা বলতেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বলতেন। সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখাতেন। আর কখনো তার মুখে আমরা শুনবো না ‘বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক’।

বিশ্বজিত সাহা: লেখক, সাংবাদিক, উত্তর আমেরিকা বইমেলার প্রতিষ্ঠাতা

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।