ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

নিষ্ঠুর শাসক স্টালিনের কি কোনো আবেগ ছিল?

নঈম নিজাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০
নিষ্ঠুর শাসক স্টালিনের কি কোনো আবেগ ছিল?

রাতে ঘুমাতে গেলেন দুনিয়ার সবচেয়ে কঠোর শাসক স্টালিন। ভিন্নমতকে যিনি একদম সহ্য করতেন না। স্টালিনের সোভিয়েত ইউনিয়নে কেউ তার বিরোধিতা করা মানেই মৃত্যু। মেজাজ ভালো থাকলে নির্বাসন অথবা জেল। এমনকি ভিন্নমতাবলম্বী কমিউনিস্ট পার্টি করলেও নিস্তার ছিল না। বিদ্রোহী হলে তো কথাই নেই। দেশের কোনো জনগোষ্ঠীর ওপর সন্দেহ হলে তাদের নির্বাসনে পাঠাতেন দেশের আরেক প্রান্তে। এক জীবনে তাদের আর ফেরা হতো না নিজের প্রিয় শহর বা গ্রামে।

স্টালিনের জমানায় একটা কথা চালু ছিল- একজনকে মারলে খুন। দুই কোটি হলে পরিসংখ্যান।

স্টালিন ক্ষমতার চেয়ারে নিজের একটা জগৎ তৈরি করেন। এই জগতে সবাই প্রবেশ করতে পারত না। কারও সাহসও ছিল না কাছাকাছি হওয়ার। এমনকি ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও খুব সহজে তার সামনে যেতে চাইতেন না। একটা অদৃশ্য দেয়াল ছিল। নির্দেশ ছিল ঘুমানোর পর তাকে ডাকা যাবে না। প্রবেশ করা যাবে না তার রুমে। এ ব্যবস্থাই একদিন কাল হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসা ছাড়া তার মৃত্যুর কারণ হয়ে যায়।

দিনটি ছিল ১৯৫৩ সালের ১ মার্চ। রাতভর স্টালিন আড্ডা দেন দলের দুই সিনিয়র নেতার সঙ্গে। এর মাঝে একজন ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আরেকজন ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী। তারা একসঙ্গে সিনেমা দেখলেন। খেলেন। তারপর ঘুমাতে গেলেন ১৫ কিলোমিটার দূরের এক গেস্ট -হাউসে। গাড়ি থেকে নেমে স্টালিন সোজা শয়নকক্ষে। ঘুম দিলেন। পরদিন অনেক বেলার পরও ঘুম ভাঙল না। সবার ধারণা রাতভর জেগে ছিলেন। আর তা ছাড়া বয়সও বাড়ছে। তাই ঘুম থেকে উঠছেন না। কিন্তু বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা পার হলো। চিন্তিত হলেন ব্যক্তিগত সহকারীরা। কিন্তু কে ডাকবেন এই লৌহমানবকে? কার এত সাহস?

সন্ধ্যার পর গেস্ট-হাউসে একজন কমান্ডার এলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ডাকতে গেলেন স্টালিনকে। কিন্তু ঘরে ঢুকেই থমকে গেলেন। দেখলেন নিজের মলমূত্রের ওপর পড়ে আছেন দুনিয়া কাঁপানো ক্ষমতাবান মানুষটি। জীবিত না মৃত বোঝা যাচ্ছিল না। সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার ডাকা হলো। পরিষ্কার করে তাকে শোয়ানো হলো বিছানায়। চিকিৎসক দেখলেন। বললেন, ম্যাসিভ ব্রেইন স্ট্রোক। রাতেই হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ এভাবে পড়ে থাকার কারণে বাঁচানো কঠিন। তারপর আরও তিন দিন বেঁচে ছিলেন। দুনিয়ার কোনো চিকিৎসাব্যবস্থাই তাকে টিকিয়ে রাখতে পারল না। চলে গেলেন চিরতরে ৫ মার্চ।

স্টালিনের এটাই প্রথম অ্যাটাক নয়। এর আগে ১৯৪৫ সালে তিনি প্রথম হৃদরোগে আক্রান্ত হন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন। তারপর আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েন কাজকর্মে। দুনিয়াব্যাপী তখন উথাল-পাথাল সময়। ক্ষণে ক্ষণে সোভিয়েতের সামনে ছিল চ্যালেঞ্জ। শুধু দেশে দেশে নয়, গোয়েন্দা লড়াইও ছিল আলাদা। একদিকে কেজিবি, আরেকদিকে সিআইএ। পাল্লা দিয়ে কাজ করত একটি আরেকটির বিরুদ্ধে। স্টালিন ছিলেন বিশ্বক্ষমতার মূল কেন্দ্রে। শেষ ছিল না তার সেই ক্ষমতা ও দাপটের। তিনি কমিউনিস্ট দুনিয়ার একক শাসক। কিন্তু দুনিয়ায় কোনো কিছুই অমর নয়। কাজ করে অমরত্ব নিতে হয়।

কমিউনিস্ট শাসক জোসেফ স্টালিন ছিলেন নিষ্ঠুর একনায়ক। তিনি যা খুশি তাই করতেন। নিষ্ঠুরতা, কঠোরতা ও ক্ষমতার দীর্ঘ ব্যবহারে কমিউনিস্ট শাসকদের মাঝে তাকে কেউই হার মানাতে পারেনি। রাষ্ট্রনায়ক বিপ্লবী লেনিন ছিলেন আলাদা। লেনিন ছিলেন মার্কসবাদের একান্ত অনুসারী। কার্ল মার্কসের নীতির ভিত্তিতে শাসন করতেন। কিন্তু স্টালিন ওসবের ধার ধারতেন না। তিনি ছিলেন নিজের মতো। কঠোরভাবে ভিন্নমত দমন করতেন। ক্ষমতায় থাকাকালেই স্টালিনকে কিছুটা অনুধাবন করেন লেনিন। এ কারণে লেনিন হতাশ ছিলেন। বিশেষ করে স্টালিন ও ট্রটস্কির মাঝে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব তাকে আহত করে। অনেকবার থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি।

স্টালিন ছিলেন দুঃসাহসী নিষ্ঠুর শাসক। তার লক্ষ্যই ছিল বিশ্বে সোভিয়েতকে অন্যরূপে নেওয়া। কট্টরপন্থি এই নেতা ক্ষমতায় বসেই সবকিছু তছনছ করে দেন। একবার গোয়েন্দা সংস্থা তাকে জানায়, জার্মান জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে আর পারা যাচ্ছে না। ভবিষ্যতে ওরা নিজেদের রূপ বদল করতে পারে। গোপনে নির্দেশ দিলেন, জার্মানদের একটি অংশকে পাঠিয়ে দাও কাজাখস্তানে। এভাবেই তিনি দেশ চালাতেন। ক্ষমতা নিয়েই সিদ্ধান্ত নেন ট্রটস্কিকে শেষ করে দেবেন। নিজের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে নির্দেশ দেন কেজিবিকে। ব্যস, আর যায় কোথায়? পরিস্থিতি অনুধাবন করে দেশ ছাড়েন ট্রটস্কি। কিন্তু বাঁচতে পারলেন না। কেজিবি হত্যা করে ট্রটস্কিকে। অথচ ট্রটস্কি ছিলেন স্টালিনের মতো বিপ্লবের আরেক নায়ক। লেনিনের আরেক বিশ্বস্ত সহচর। কমিউনিস্ট আন্দোলনকে চূড়ান্ত বিজয়ে নেওয়ার পথে তার ছিল বিশাল অবদান। শুধু দেশ চালানো নিয়ে কিছুটা ভিন্নমতই কাল হয়ে যায়।

স্টালিন কঠোরভাবে ধর্মবিরোধী ছিলেন। গির্জা, মসজিদসহ সব প্রার্থনাস্থল তিনি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন। ধর্মকে আফিমের সঙ্গে তুলনা করতেন। স্টালিনের সময়ে সোভিয়েতের জনসংখ্যা কমে যায়। এর পরিমাণ অর্ধেকের নিচে নামার রহস্য নিয়ে এখনো চলছে গবেষণা। অনেক কিছুই বের হচ্ছে। আবার কত কিছু ধামাচাপা দিয়েছে কেজিবি। নিষ্ঠুর ইতিহাস কেউই রাখতে চায় না। সেদিন এক বন্ধু বললেন, আপনি সবকিছু নেতিবাচকভাবে নেন কেন? রাশিয়ার একটি অংশ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্টালিনের নাম নেয় এখনো। তারা মনে করে স্টালিনই তাদের হিরো। স্টালিন জীবিত থাকলে রাশিয়া খানখান হতো না। বিশ্বে মাথা উঁচু করেই থাকত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার সফলতা ছিল তাক লাগানো। যুদ্ধ শেষে স্টালিন সোভিয়েতকে নতুন মাত্রা দেন। বিশ্বের পরাশক্তি হিসেবে ভারসাম্য অবস্থা তৈরি করেন। স্টালিন ছাড়া এ কাজটুকু করা ছিল অসম্ভব। নিউটনের সূত্র সবখানেই। দুইভাবেই মানুষ সব দেখে।

স্টালিনের কঠোরতার ইতিহাস আর টানলাম না। বরং ভালোবাসা দিবসে স্মরণ করছি প্রেমিক হিসেবে তিনি কেমন ছিলেন? এই ভাবনাতে দেখলাম একেবারে খারাপ না। বিয়ে করেছেন দুটি। আলোচিত প্রেম করেছেন আরেকটি। কিন্তু মৃত্যুর পর মায়ের লাশ দেখতে যাননি। ব্যক্তিগত জীবনে প্রচুর মদ পান করতেন। কিন্তু কখনই মাতাল হতেন না। বরং মদ পান করে তিনি আরও স্থির হতেন। সিদ্ধান্ত নিতেন ক্ষিপ্রগতিতে।

রাশিয়ান ভদকার চেয়ে জর্জিয়ান ওয়াইন ছিল তার বেশি পছন্দ। চার্লি চ্যাপলিনের ছবি দেখতেন। ৩০ বছর বয়সে প্রেমে পড়েন ১৩ বছর বয়সী লিডিয়ার। এই মেয়েটির সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে সমালোচকরা অনেক কথা বলেন। অনেকে নেতিবাচক কথা লিখে গেছেন। যাই হোক, দাম্পত্য জীবনে আরেক স্টালিনকে দেখতে পাই। স্টালিনের প্রথম স্ত্রীর নাম ক্যাটরিনা ভ্যানিজ। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় থাকা হয়নি তাদের। দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম অ্যাডিজডা অ্যালিয়েডা। এই নারীর সঙ্গে এক যুগ কাটান সোভিয়েত লৌহমানব।

তাদের প্রথম সন্তানের মৃত্যু হয়। পরে আরও এক মেয়ে, তিন ছেলের জন্ম হয়। এত কিছুর পরও কি স্টালিনকে প্রেমিকপুরুষ বলা যাবে? স্টালিনের মতো হিটলারও প্রেমিক ছিলেন। যুদ্ধে হেরে হিটলার প্রেমিকাকে নিয়ে জীবন বিসর্জন দেন। তাই বলে হিটলারকে প্রেমিক বলা যায়? এ জগতে প্রেম-ভালোবাসা কি প্রেমিক-প্রেমিকার নিজস্ব কিছু? প্রেম চিরন্তন সত্য। কিন্তু প্রেম তো শুধু দুজন মানুষের একক কিছু না।

মানবতার সঙ্গে সম্পর্কহীন মানুষকে কোনোভাবে প্রেমিক বলা ঠিক হবে না। প্রেম নিয়ে নজরুলের এক ধরনের আক্ষেপ ছিল। রবীন্দ্রনাথের ছিল আরেক। জীবনানন্দ দাশের কষ্ট ছিল। সেই কষ্টের কিছুটা নমুনা পাই জীবনানন্দের একটি কবিতায়। এই জগৎকে নিয়ে জীবনানন্দ দাশের সেই কবিতাটি হলো, ‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,/যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা/যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই - প্রীতি নেই - করুণার আলোড়ন নেই/পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া। /যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি/এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব’লে মনে হয়/মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা/শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়। ’

এ জগৎ-সংসার থেকে প্রেম-ভালোবাসা অনেক আগেই উঠে গেছে। নিষ্ঠুরতা ভর করেছে মানুষের মাঝে। আবেগহীন বন্ধুত্ব প্রেম-ভালোবাসা মায়ার বন্ধনগুলোকে আলগা করে দিচ্ছে। বিষিয়ে তুলছে চিরচেনা চলার পথটুকু। হতাশ, বঞ্চিত মানুষ দীর্ঘশ্বাস ফেলার জায়গাটুকু পায় না। নিজের কষ্টটুকু নিজেই লালন করে। স্বার্থের বেড়াজাল তিলে তিলে শেষ হয়ে যায়। আর বিশ্বাসঘাতকতার উল্লাসনৃত্যের কাছে পরাজিত হয় স্বপ্নের মায়া। কষ্টের দহন শুধু কাঁদিয়ে বেড়ায়। হেমন্তের দরাজ গলার সেই কণ্ঠের মতো কেউ কারও পাশে দাঁড়ায় না। কেউ কাউকে খুঁজে নেয় না।

হেমন্ত গেয়েছিলেন- ‘বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও/মনের মাঝেতে তাকে চিরদিন ডেকে নিও/ভুলো না তাকে ডেকে নিতে তুমি...’। হায় কোথায় সেই বন্ধুত্ব! কোথায় সেই আবেগ! কোথায় সেই পথ দেখানো। আবেগই মানুষের মাঝে পরিবর্তনের ঢেউ তৈরি করে। আবেগহীন মানুষ নিষ্ঠুর হয়। জোসেফ স্টালিন আর হিটলারের মতো তাদের দয়ামায়া থাকে না। এ জগৎ-সংসারের সবকিছুকে তারা কঠোরভাবে দেখে। চিরচেনা জগৎকে অন্ধকার করে তোলে। একটা সময় চিঠি লেখাতে আবেগ ছিল। এখন সেই ডাকপিয়ন নেই। সেই চিঠিও নেই। ডিজিটাল দুনিয়া মানুষের আবেগ কেড়ে নিয়েছে। আবেগ-ভালোবাসা চিরতরে বিদায়ের কারণেই এখন দরকার পড়ে ভালোবাসা দিবসের! আরে ভাই! ভালোবাসা নির্দিষ্ট একটি দিনের হবে কেন? ভালোবাসা তো আল্লাহর বারো মাসের। ভালোবাসা নির্দিষ্ট কারও একক নয়। ভালোবাসা দরকার সবার জন্য। এখানে পরিবার, সমাজ, দেশ সবখানেই ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

আমাদের দেশে ভালোবাসা দিবস বেশি দিনের নয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল এরশাদবিরোধী আন্দোলনের বড় একটি ধাপ। সেই আন্দোলনে জীবন দিয়েছিলেন জাফর, জয়নাল, দীপালি সাহাসহ অনেকেই। ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের শুরু করা আন্দোলনের কথা এখন সবাই ভুলে গেছে। দিবসে বন্দি দিনগুলো আমাদের নিয়ে যাচ্ছে জগতের এক নতুন মাত্রায়। কিন্তু ক্ষুদ্র জীবনের বড় স্বার্থগুলো কোনো কিছুই স্বাভাবিক থাকতে দেয় না। জাগতিক চাহিদা তছনছ করে দেয় সবকিছু। আর রাজনীতি করলে তো কথাই নেই। বিরোধ লম্বা হতে থাকে দীর্ঘ পরিসরে। কেউই কাউকে বিশ্বাস করে না। কেউই কাউকে ধরে রাখে না। প্রয়োজন শেষ হলে মুখ দেখাদেখিও বন্ধ। সম্পর্কের বন্ধনগুলো এখন ভীষণ নড়বড়ে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক বন্ধনগুলোর অবস্থা আরও খারাপ।

কথায় কথায় ডিভোর্স। ছাড়াছাড়ি। কোনো কিছুই কোনো ঘটনা নয়। শহরের জীবনে সবাই একটা নেকাব নিয়ে চলে। ভিতরটা কেউ দেখে না। হৃদয়ের অন্দর মহলে কেউ প্রবেশ করে না। সবখানে প্রতিযোগিতা জৌলুসের। সীমাহীন লোভের। প্রয়োজন নেই তবু মানুষ অপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য লড়ে নিজের সর্বনাশ করে। ব্র্যান্ডের ফোন, কল, কাপড় দরকার নেই। তবু কিনতে হয়। অদ্ভুত এক প্রতিযোগিতা। কার্ল মার্কস লিখেছেন, ‘পুঁজিবাদ এমন জিনিস তৈরি করবে, যা মানুষের দরকার নেই। তার পরও বস্তুর চাহিদা তৈরি হবে। ’ আজ তাই হয়েছে। কৃত্রিমতার পেছনে ছুটছে সবাই।

কার্ল মার্কস কৃত্রিম এ অবস্থার গলদ নিয়েও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন। বলেছিলেন, একদিন সব তছনছ হয়েও যেতে পারে। তার পরও কাল্পনিক চাহিদা সম্পর্কে সতর্ক থাকার সেই হুঁশিয়ারিতে কারও মাথাব্যথা নেই। বরং মায়াময় জগতে তৈরি হচ্ছে ঘাটে ঘাটে লুটেরার সিন্ডিকেট। দরকার নেই তবু ওরা ব্যাংক ঋণ নিয়ে পাচার করছে। সরকারি অফিস-আদালতের চেয়ারগুলো লোভনীয় করছে। ফাইল আটকে জিম্মি করছে। নীতি-নৈতিকতা নিয়ে বড় বড় কথা বলছে। বলার কিছু নেই। করার কিছু নেই। শুধু শুনছি। দেখছি।

লেখক: সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।